পরকীয়ায় লিপ্ত স্ত্রীর ???

প্রশ্ন

আমার স্ত্রী অন্য পুরুষের সাথে ফোনে
কথা বলে ও দেখা সাক্ষাত করে। ঔ
ছেলের সাথে আলিঙ্গন ও চুম্বন হয়
কিন্তু সহবাস হয়নি সে কোরআন স্পর্শ
করে বলেছে। এখন আমি তাকে কি গ্রহণ
করতে পারি? আর পারলে শরিয়ত
অনুযায়ী আমার করণীয় কি?
প্রশ্নকর্তা-নাম ঠিকানা প্রকাশে
অনিচ্ছুক

উত্তর

ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
আপনার স্ত্রী যদি সাচ্চা দিলে তওবা
করে তাহলে আপনি আপনার স্ত্রীকে
গ্রহণ করতে পারেন। এতে কোন সমস্যা
নেই। তওবা বলা হয় তিন জিনিসকে।
যথা
ক) গোনাহের কাজটি ছেড়ে দেয়া।
খ)গোনাহটির জন্য লজ্জিত হওয়া।
গ) ভবিষ্যতে কখনোই উক্ত পাপকর্ম না
করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা।
যদি আপনার স্ত্রী তওবা করতে সম্মত
না হয়, তাহলে পারিবারিকভাবে
বিষয়টির সুরাহা করতে চেষ্টা করুন।
আপনার স্ত্রী কী চায়? সেকি আপনার
সাথে থাকতে চায়? সেকি এ অপকর্ম
ছেড়ে দিবে কি না? এসব বিষয়ে
পারিবারিকভাবে মিটমাট করতে
চেষ্টা করুন। যদি এতেও সক্ষম না হোন
তাহলে তাকে এক তালাক প্রদান করে
আলাদা করে দিন। তিন তালাক
কিছুতেই প্রদান করবেন না। যেহেতু এক
তালাক দ্বারাই বিচ্ছেদের
প্রয়োজনীয়তা পূর্ণ হয়ে যায়, তাই
একাধিক তালাক দেয়া অর্থহীন কর্ম
ছাড়া আর কিছু নয়। যেন ভবিষ্যতে
মিলমিশ হয়ে গেলে আবার একত্রে
বসবাসের সুযোগ বাকি থাকে।
ﺍﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟﺘَّﻮْﺑَﺔُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺴُّﻮﺀَ ﺑِﺠَﻬَﺎﻟَﺔٍ ﺛُﻢَّ ﻳَﺘُﻮﺑُﻮﻥَ ﻣِﻦْ
ﻗَﺮِﻳﺐٍ ﻓَﺄُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﻳَﺘُﻮﺏُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ۗ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠِﻴﻤًﺎ ﺣَﻜِﻴﻤًﺎ
‏[ ٤: ١٧ ‏]ﻭَﻟَﻴْﺴَﺖِ ﺍﻟﺘَّﻮْﺑَﺔُ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺴَّﻴِّﺌَﺎﺕِ ﺣَﺘَّﻰٰ ﺇِﺫَﺍ ﺣَﻀَﺮَ
ﺃَﺣَﺪَﻫُﻢُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕُ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﻧِّﻲ ﺗُﺒْﺖُ ﺍﻟْﺂﻥَ ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻤُﻮﺗُﻮﻥَ ﻭَﻫُﻢْ ﻛُﻔَّﺎﺭٌ ۚ
ﺃُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﺃَﻋْﺘَﺪْﻧَﺎ ﻟَﻬُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺑًﺎ ﺃَﻟِﻴﻤًﺎ ‏[ ٤: ١٨
অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল
করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ
করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে;
এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ
ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,
রহস্যবিদ।
আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই,
যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি
যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু
উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি
এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই
তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায়
মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে
রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}
ﺍﻟﻄَّﻠَﺎﻕُ ﻣَﺮَّﺗَﺎﻥِ ۖ ﻓَﺈِﻣْﺴَﺎﻙٌ ﺑِﻤَﻌْﺮُﻭﻑٍ ﺃَﻭْ ﺗَﺴْﺮِﻳﺢٌ ﺑِﺈِﺣْﺴَﺎﻥٍ ۗ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ ﻟَﻜُﻢْ
ﺃَﻥ ﺗَﺄْﺧُﺬُﻭﺍ ﻣِﻤَّﺎ ﺁﺗَﻴْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥ ﻳَﺨَﺎﻓَﺎ ﺃَﻟَّﺎ ﻳُﻘِﻴﻤَﺎ ﺣُﺪُﻭﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ۖ
ﻓَﺈِﻥْ ﺧِﻔْﺘُﻢْ ﺃَﻟَّﺎ ﻳُﻘِﻴﻤَﺎ ﺣُﺪُﻭﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻠَﺎ ﺟُﻨَﺎﺡَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻤَﺎ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺍﻓْﺘَﺪَﺕْ ﺑِﻪِ ۗ
ﺗِﻠْﻚَ ﺣُﺪُﻭﺩُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻌْﺘَﺪُﻭﻫَﺎ ۚ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺘَﻌَﺪَّ ﺣُﺪُﻭﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﺄُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﻫُﻢُ
ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤُﻮﻥَ ‏[ ٢: ٢٢٩ ]
তালাকে-‘রাজঈ’ হ’ল দুবার পর্যন্ত
তারপর হয় নিয়মানুযায়ী রাখবে,না হয়
সহৃদয়তার সঙ্গে বর্জন করবে। আর
নিজের দেয়া সম্পদ থেকে কিছু
ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য
জায়েয নয় তাদের কাছ থেকে। কিন্তু
যে ক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই এ
ব্যাপারে ভয় করে যে, তারা আল্লাহর
নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না,
অতঃপর যদি তোমাদের ভয় হয় যে,
তারা উভয়েই আল্লাহর নির্দেশ বজায়
রাখতে পারবে না, তাহলে সেক্ষেত্রে
স্ত্রী যদি বিনিময় দিয়ে অব্যাহতি
নিয়ে নেয়, তবে উভয়ের মধ্যে কারোরই
কোন পাপ নেই। এই হলো আল্লাহ
কর্তৃক নির্ধারিত সীমা। কাজেই একে
অতিক্রম করো না। বস্তুতঃ যারা
আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন
করবে,তারাই জালেম। {বাকারা-২৩০}
ﻓَﺎﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﻠﻪَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ، ﻓَﺈِﻧَّﻜُﻢْ ﺃَﺧَﺬْﺗُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﺑِﺄَﻣَﺎﻥِ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻭَﺍﺳْﺘَﺤْﻠَﻠْﺘُﻢْ
ﻓُﺮُﻭﺟَﻬُﻦَّ ﺑِﻜَﻠِﻤَﺔِ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻭَﻟَﻜُﻢْ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻦَّ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﻳُﻮﻃِﺌْﻦَ ﻓُﺮُﺷَﻜُﻢْ ﺃَﺣَﺪًﺍ
ﺗَﻜْﺮَﻫُﻮﻧَﻪ،ُ ﻓَﺈِﻥْ ﻓَﻌَﻠْﻦَ ﺫَﻟِﻚَ ﻓَﺎﺿْﺮِﺑُﻮﻫُﻦَّ ﺿَﺮْﺑًﺎ ﻏَﻴْﺮَ ﻣُﺒَﺮِّﺡٍ، ﻭَﻟَﻬُﻦَّ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ
ﺭِﺯْﻗُﻬُﻦَّ ﻭَﻛِﺴْﻮَﺗُﻬُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑِ ،
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তোমরা
নারীদের ব্যাপারে আল্লাহ
তাআলাকে ভয় কর। কেননা, তোমরা
তাদেরকে গ্রহণ করেছো আল্লাহর
জামানত এবং আল্লাহর নির্দেশে
তাদের যৌনাঙ্গকে করেছো হালাল।
তাদের প্রতি তোমাদের অধিকার হল,
তোমরা যাকে অপছন্দ কর তারা যেন
তোমাদের বিছানায় আসতে না দেয়,
[অর্থাৎ তোমাদের সন্তুষ্টি ছাড়া
কাউকে যেন তোমাদের গৃহে আসতে না
দেয়। চাই সে পুরুষ হোক বা নারী]। যদি
তারা এটা করে [অর্থাৎ অপছন্দের
ব্যক্তিকে আসতে দেয়] তবে তাদের মৃদু
প্রহার কর। আর তোমাদের উপর তাদের
অধিকার, তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে
তাদের অন্ন ও বস্ত্রের ব্যবস্থা করবে।
{সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১২১৮ নং
হাদীসের অংশ বিশেষ}
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট
এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com
lutforfarazi@yahoo.com

Leave a comment