ওষুধ খেয়ে হায়েজ বন্ধ করে মহিলারা যদি রমজানের রোযা রাখে তাহলে কি রোযা হবে ?

প্রশ্ন

ওষুধ খেয়ে হায়েজ বন্ধ করে মহিলারা
যদি রমজানের সকল রোযা রাখে
তাহলে কি রোযা হবে? নাকি পরে
আবার কাজা করতে হবে? বিষয়টি
পরিস্কারভাবে ভাল হতো।

জবাব

ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
প্রতি মাসে মহিলাদের হায়েজ
হওয়াটা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক বিষয়।
এটা আল্লাহ তাআলার নেজাম।
রমজানে এটাকে বন্ধ করে রাখাটা
উচিত হবে না। এতে শারিরীকভাবে
ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা যেহেতু হায়েজের
কারণে রোযা না রাখার অনুমতি
প্রদান করেছেন, তাই সে সময় হায়েজ
স্বাভাবিক রেখে রোযা না রাখাটাই
উচিত। পরে তা কাযা করে নিবে।
ইনশাআল্লাহ এতে সওয়াব হবে বেশি।
কারণ রমজানে সবার সাথে রোযা
রাখা সহজ। কিন্তু রমজানের পর একা
একা রোযা রাখাটা কঠিন। আর যে
ইবাদত পালন যত কষ্টকর, তার সওয়াবও
তত বেশি।
তবে যদি কোন মহিলা রমজান আসার
আগেই এবং হায়েজ শুরু হওয়ার আগে ওষুধ
খেয়ে তা বন্ধ করে দেয়, তাহলে তার
জন্য রোযা রাখা জায়েজ হবে। কোন
সমস্যা নেই।
কিন্তু যদি রমজান চলে আসে, আর রক্ত
জারি হয়ে যাওয়ার পর ওষুধ খেয়ে বন্ধ
করে দেয়, তাহলে হায়েজের সর্বনিম্ন
সীমা কমপক্ষে ৩ দিন পর্যন্ত রোযা
রাখতে পারবে না। এর পর থেকে
রাখতে পারবে। {কিতাবুল
ফাতওয়া-৩/৪০৫}
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট
এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

বিবস্ত্র হয়ে গোছল করলে কি ফরজ গোছল আদায় হবে না ?

প্রশ্ন

সালামু আলাইকুম। সম্পূর্ণ কাপড় ছাড়া ফরজ
গোসল সম্পন্ন করলে কি কোন সমস্যা হবে? একটু জানাবেন

উত্তর

ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
প্রয়োজন ছাড়া বাথরুমে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা
উচিত নয়। হাদিসে এ ব্যাপারে অনুৎসাহিত
করা হয়েছে। সুতরাং তা পরিহার করা উচিত।
তবে এভাবে গোছল করলে গোছল আদায় হবে না,
বিষয়টি এমন নয়। বরং গোছল শুদ্ধ হয়ে যাবে।
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺑَﻬْﺰُ ﺑْﻦُ ﺣَﻜِﻴﻢٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺃَﺑِﻲ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻱ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﺖُ: ﻳَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﻮْﺭَﺍﺗُﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻧَﺄْﺗِﻲ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﻭَﻣَﺎ ﻧَﺬَﺭُ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﺍﺣْﻔَﻆْ ﻋَﻮْﺭَﺗَﻚَ ﺇِﻻَّ
ﻣِﻦْ ﺯَﻭْﺟَﺘِﻚَ ﺃَﻭْ ﻣَﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﻳَﻤِﻴﻨُﻚَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻳَﻜُﻮﻥُ ﻣَﻊَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞِ؟
ﻗَﺎﻝَ: ﺇِﻥْ ﺍﺳْﺘَﻄَﻌْﺖَ ﺃَﻥْ ﻻَ ﻳَﺮَﺍﻫَﺎ ﺃَﺣَﺪٌ ﻓَﺎﻓْﻌَﻞْ، ﻗُﻠْﺖُ: ﻭَﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻳَﻜُﻮﻥُ
ﺧَﺎﻟِﻴًﺎ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺎﻟﻠَّﻪُ ﺃَﺣَﻖُّ ﺃَﻥْ ﻳُﺴْﺘَﺤْﻴَﺎ ﻣِﻨْﻪ.ُ
মুয়াবিয়া বিন হাইদা হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, আমি রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলাম
যে, আমাদের থেকে আমাদের সতরকে লুকিয়ে
রাখবো আর কাদের থেকে নয়? রাসূল সাঃ
ইরশাদ করলেন, তোমার স্ত্রী ও তোমাদের
কৃতদাসী ছাড়া সর্বদা তোমার সতরকে ঢেকে
রাখবে। তখন এক ব্যক্তি বললেন, এক পুরুষ
আরেকজন পুরুষের সাথে থাকা অবস্থায়ও জরুরী?
রাসূল সাঃ বললেন, যথা সম্ভব তা কারো
সামনে খুলবে না। আমি বললাম, ব্যক্তি যখন
একাকী থাকে তখনো? তিনি বললেন, হ্যাঁ,
আল্লাহ তাআলাকে অধিক লজ্জা করা উচিত।
[সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৭৬৯]
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উত্তেজনাবশত লজ্জাস্থান থেকে হালকা পানি বের হলে অজুর হুকুম কী ?

প্রশ্ন

As-salamu-alykum shekyh,
Would you please let me know. Once i made
my audu and i was talking with my wife and
after sometime talking i found that some
small bit of water came out under my navel
and its touch with cloth hope u understand
what i am trying to say here. Now my
question is do i have to change cloth and do
i have to make new audu for reciting quran
or saying pray.
Look forward to hearing from you son.
Jazakum Allah Kair…..

উত্তেজনাবশত লজ্জাস্থান থেকে হালকা পানি বের হলে অজুর হুকুম কী?

উত্তর
ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
সামান্য উত্তেজনার ফলে বীর্য বের হবার
আগে যে পানি লজ্জাস্থান দিয়ে বের হয়,
সেটিকে বলা হয় মযী। মযী বের হলে অজু
ভেঙ্গে যায়। গোসল করা আবশ্যক হয় না। যে
স্থানে তা লেগেছে তা ধুয়ে নামায পড়া
যাবে। কোন সমস্যা নেই।
ﻭﺍﻣﺎ ﺭﻃﻮﺑﺔ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﺍﻟﺨﺎﺭﺩ ﻓﻄﺎﻫﺮﺓ ﺍﺗﻔﺎﻗﺎ … ﻭﻣﻦ ﻭﺭﺍﺀ ﺑﺎﻃﻦ ﺍﻟﻔﺮﺩ
ﻓﺎﻧﻪ ﻧﺠﺲ ﻗﻄﻌﺎ، ‏( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ – 1/313 )
( ﻭﻋﻔﺎ ‏) ﺍﻟﺸﺎﺭﻉ ‏( ﻋﻦ ﻗﺪﺭ ﺩﺭﻫﻢ ‏)، ﻭﺍﻥ ﻛﺮﻩ ﺗﺤﺮﻳﻤﺎ، ﻓﻴﺠﺐ
ﻏﺴﻠﻪ ..… ‏( ﻭﻋﺮﺽ ﻣﻘﻌﺮ ﺍﻟﻜﻒ ﻓﻰ ﺭﻗﻴﻖ ﻣﻦ ﻣﻐﻠﻈﺔ ﻛﻌﺬﺭﺓ ‏)
ﺁﺩﻣﻰ، ﺯﻛﺬﺍ ﻛﻞ ﻣﺎ ﺧﺮﺝ ﻣﻨﻪ ﻣﻮﺟﺒﺎ ﻟﻮﺿﻮﺀ ﺃﻭ ﻏﺴﻞ ﻣﻐﻠﻆ ،
ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﺎﺑﺪﻳﻦ ﺍﻟﺸﺎﻣﻰ – ‏( ﻗﻮﻟﻪ: ﻭﺍﻥ ﻛﺮﻩ ﺗﺤﺮﻳﻤﺎ ‏) ﺃﺷﺎﺭ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ
ﺍﻟﻌﻔﻮ ﻋﻨﻪ ﺑﺎﻟﻨﺴﺒﺔ ﺇﻟﻰ ﺻﺤﺔ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﺑﻪ، .… ﻓﻔﻰ ﺍﻟﻤﺤﻴﻂ: ﻳﻜﺮﻩ ﺃﻥ
ﻳﺼﻠﻰ ﻭﻣﻌﻪ ﻗﺪﺭ ﺩﺭﻫﻢ ﺃﻭ ﺩﻭﻧﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺠﺎﺳﺔ ﻋﺎﻟﻤﺎ ﺑﻪ ﻻﺧﺘﻼﻑ
ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻓﻴﻪ، ‏(ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻄﻬﺎﺭﺓ، ﺑﺎﺏ
ﺍﻷﻧﺠﺎﺱ – 1/316 318-، ﻭﻛﺬﺍ ﻓﻰ ﺑﺪﺍﺋﻊ ﺍﻟﺼﻨﺎﺋﻊ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻄﻬﺎﺭﺓ،
ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺑﻴﺎﻥ ﺍﻟﻤﻘﺪﺍﺭ ﺍﻟﺬﻯ ﻳﺼﻴﺮ ﺍﻟﻤﺤﻞ ﻧﺠﺴﺎ- 1/429 )
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

হায়েজা স্ত্রীর কোন অঙ্গ স্পর্শ জায়েজ ?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম,,
হযরত, মেয়েদের হায়েজের সময় তার স্বামীর
জন্য নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত সমস্ত অঙ্গ স্পর্শ
করা জায়েজ আছে কিনা?

উত্তর

ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক করার
তিন সূরত। যথা-
১- সহবাস করা। এটি হারাম। এতে কোন সন্দেহ
নেই।
২-নাভির উপর থেকে বাকি অংশ এবং হাটুর
নিচ থেকে বাকি অংশ স্পর্শ করা জায়েজ।
এতেও কোন মতভেদ নেই।
৩- নাভির নিচ থেকে হাটু পর্যন্ত স্পর্শ করা
কাপড়ের উপর দিয়ে।
এটিও জায়েজ আছে। কোন সমস্যা নেই।
৪- নাভির নিচ থেকে হাটু পর্যন্ত স্পর্শ করা
কাপড় ছাড়া সরাসরি।
এতে মতভেদ আছে। কারো কারো মতে সহবাস
না করলে জায়েজ আছে। বাকি ইমাম আবূ
হানীফা রহঃ, ইমাম শাফেয়ী রহঃ, ইমাম
মালিক রহঃ সহ অধিকাংশ আলেমদের মতে তা
জায়েজ নয়।
তাই কাপড় ছাড়া তা পরিহার করতে হবে।
ﻓَﻴَﺠُﻮﺯُ ﺍﻟِﺎﺳْﺘِﻤْﺘَﺎﻉُ ﺑِﺎﻟﺴُّﺮَّﺓِ ﻭَﻣَﺎ ﻓَﻮْﻗَﻬَﺎ ﻭَﺍﻟﺮُّﻛْﺒَﺔِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺤْﺘَﻬَﺎ ﻭَﻟَﻮْ ﺑِﻠَﺎ
ﺣَﺎﺋِﻞٍ، ﻭَﻛَﺬَﺍ ﺑِﻤَﺎ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﺑِﺤَﺎﺋِﻞٍ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺍﻟْﻮَﻁْﺀِ ﻭَﻟَﻮْ ﺗَﻠَﻄَّﺦَ ﺩَﻣًﺎ، ‏( ﺭﺩ
ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻄﻬﺎﺭﺓ، ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺤﻴﺾ – 1/486 ، ﺍﻟﺒﺤﺮ ﺍﻟﺮﺍﺋﻖ، ﺑﺎﺏ
ﺍﻟﺤﻴﺾ – 1/198 ، ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﺍﻟﻔﺼﻞ ﺍﻟﺮﺍﺑﻊ ﻓﻰ ﺍﺣﻜﺎﻡ
ﺍﻟﺤﻴﺾ – 1/39 )
ﺍﻋﻠﻢ ﺍﻥ ﻣﺒﺎﺷﺮﺓ ﺍﻟﺤﺎﺋﺾ ﻋﻠﻰ ﺛﻼﺛﺔ ﺍﻧﻮﺍﻉ ﺍﺣﺪﻫﺎ ﺍﻟﻤﺒﺎﺷﺮﺓ ﻓﻰ
ﺍﻟﻔﺮﺝ ﺑﺎﻟﻮﻃﺊ ﻭﻫﻮ ﺣﺮﺍﻡ ﺑﺎﻟﻨﺺ ﻭﺍﻻﺟﻤﺎﻉ، ﻭﺍﻟﺜﺎﻧﻰ ﺍﻟﻤﺒﺎﺷﺮﺓ ﺑﻤﺎ
ﻓﻮﻕ ﺍﻟﺴﺮﺓ ﻭﺩﻭﻥ ﺍﻟﺮﻛﺒﺔ ﺑﺎﻟﻴﺪ ﺍﻭ ﺍﻟﺬﻛﺮ ﻭﻏﻴﺮﻩ ﻭﻫﻮ ﻣﺒﺎﺡ
ﺑﺎﻻﺟﻤﺎﻉ، ﻭﺍﻟﺜﺎﻟﺚ ﺍﻻﺳﺘﻤﺘﺎﻉ ﺑﻤﺎ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﺧﻼ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﻭﺍﻟﺪﺑﺮ ﻓﻤﺨﺘﻠﻒ
ﻓﻴﻤﺎ ﺑﻴﻦ ﺍﻻﺋﻤﺔ، ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﻣﺎﻟﻚ ﻭﺍﻟﺸﺎﻓﻌﻰ ﺭﺣﻤﻬﻢ ﺍﻟﻠﻪ
ﻭﺍﻛﺜﺮ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻻ ﻳﺠﻮﺯ، ‏( ﺍﻭﺟﺰ ﺍﻟﻤﺴﺎﻟﻚ، ﺑﺎﺏ ﻣﺎ ﻳﺤﻞ ﻟﻠﺮﺟﻞ ﻣﻦ
ﺍﻣﺮﺃﺗﻪ ﻭﻫﻰ ﺣﺎﺋﺾ- 1/326، ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ- 1/486،
ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ- 1/39
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

মেয়েদের বিয়ের বয়স বিয়েতে মেয়ের সম্মতি ও কনে দেখা সম্পর্কিত

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম
১ , মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স?
২ , বিয়েতে মেয়ের সম্মতির প্রয়োজনীয়তা
কি?
৩ , বিয়ের জন্য মেয়ের সাথে দেখা করা
জায়েজ কি না? জায়েজ হলে দেখা করার
পদ্ধতি কি?

উত্তর

ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
১ নং এর জবাব
ইসলামের মেয়েদের বিবাহের কোন বয়সসীমা
নির্দিষ্ট করে দেয়নি। নাবালেগের বিবাহও
শুদ্ধ হয়ে যায়। {আলবাহরুর রায়েক-৩/২০৬)
তবে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর বিবাহ করা উচিত
মর্মে কুরআনে কারীমের আয়াত দ্বারা ইংগিত
পাওয়া যায়।
ﻭَﺍﺑْﺘَﻠُﻮﺍ ﺍﻟْﻴَﺘَﺎﻣَﻰ ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺑَﻠَﻐُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﻜَﺎﺡَ ﻓَﺈِﻥْ ﺁﻧَﺴْﺘُﻢْ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﺭُﺷْﺪًﺍ
ﻓَﺎﺩْﻓَﻌُﻮﺍ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻬُﻢْ
আর এতীমদের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখবে,
যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে। যদি
তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ আঁচ
করতে পার, তবে তাদের সম্পদ তাদের হাতে
অর্পন করতে পার। {সূরা নিসা-৬}
এমন সময় বিবাহ করা উচিত, যখন বিয়ে করার
দ্বারা মেয়েদের সতিত্ব ও সম্মান হিফাযত
করা বিষয়ে কোন শংকা বাকি না থাকে।
২নং এর জবাব
মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বিয়েতে মেয়ের
অনুমতি থাকা আবশ্যক। মেয়ের অনুমতি ছাড়া
বিয়ে শুদ্ধ হবে না। তবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে
পিতা বা অভিভাবক বিয়ে দিতে পারবে।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েটি থেকে অনুমতি নেয়ার
প্রয়োজন নেই। তবে পিতা-দাদা ছাড়া অন্য
কেউ নাবালেগ অবস্থায় বিয়ে দিলে উক্ত
মেয়ে বড় হওয়ার পর যদি উক্ত বিয়েতে সন্তুষ্ট
না থাকে, তাহলে বিচারকের ফায়সালা
দ্বারা উক্ত বিয়ে ভঙ্গ করে দিতে পারবে।
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ؛ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ،
ﻗَﺎﻝَ : ‏«ﺍﻟْﺄَﻳِّﻢُ ﺃَﺣَﻖُّ ﺑِﻨَﻔْﺴِﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﻭَﻟِﻴِّﻬَﺎ .
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে
বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার
ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক
হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮,
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে
আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ,
হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস
নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮,
সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে
হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী,
হাদীস নং-৩৫৭৬}
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﻗَﺎﻝَ: ” ﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺇِﻥَّ ﺃَﺑِﻲ ﻭَﻧِﻌْﻢَ
ﺍﻟْﺄَﺏُ ﻫُﻮَ، ﺧَﻄَﺒَﻨِﻲ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻋَﻢُّ ﻭَﻟَﺪِﻱ ﻓَﺮَﺩَّﻩُ، ﻭَﺃَﻧْﻜَﺤَﻨِﻲ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻛَﺎﺭِﻫَﺔٌ.
ﻓَﺒَﻌَﺚَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺑِﻴﻬَﺎ، ﻓَﺴَﺄَﻟَﻪُ ﻋَﻦْ
ﻗَﻮْﻟِﻬَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺻَﺪَﻗَﺖْ، ﺃَﻧْﻜَﺤْﺘُﻬَﺎ ﻭَﻟَﻢْ ﺁﻟُﻬَﺎ ﺧَﻴْﺮًﺍ. ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﻟَﺎ ﻧِﻜَﺎﺡَ ﻟَﻚِ، ﺍﺫْﻫَﺒِﻲ ﻓَﺎﻧْﻜِﺤِﻲ ﻣَﻦْ ﺷِﺌْﺖِ »
হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে
রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে
আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম
পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের
প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে
দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে
চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে
রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে
পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে
এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার
ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন,
“এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে
করে নাও”। {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস
নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস
নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,
হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি
আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}
، ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ: ” ﺃَﻥَّ ﺟَﺎﺭِﻳَﺔً ﺑِﻜْﺮًﺍ ﺃَﺗَﺖِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﺬَﻛَﺮَﺕْ ﺃَﻥَّ ﺃَﺑَﺎﻫَﺎ ﺯَﻭَّﺟَﻬَﺎ ﻭَﻫِﻲَ ﻛَﺎﺭِﻫَﺔٌ ﻓَﺨَﻴَّﺮَﻫَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ”
ﺇﺳﻨﺎﺩﻩ ﺻﺤﻴﺢ ﻋﻠﻰ ﺷﺮﻁ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ .
ﻭﺃﺧﺮﺟﻪ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ‏( 2096 ‏) ، ﻭﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ‏( 1875 ‏) ، ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ
ﻓﻲ “ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ” ‏( 5387 ‏) ، ﻭﺃﺑﻮ ﻳﻌﻠﻰ ‏( 2526 ‏) ، ﻭﺍﻟﻄﺤﺎﻭﻱ
4/365، ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻗﻄﻨﻲ 3/234 235-، ﻭﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻲ 7/117 ﻣﻦ
ﻃﺮﻳﻖ ﺣﺴﻴﻦ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺍﻟﻤﺮﻭﺫﻱ، ﺑﻬﺬﺍ ﺍﻹﺳﻨﺎﺩ .
ﻭﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ‏(1875 ‏) ، ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ‏( 5389 ‏) ، ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻗﻄﻨﻲ
3/235 ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﻣُﻌﻤﺮ ﺑﻦ ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ، ﻋﻦ ﺯﻳﺪ ﺑﻦ ﺣﺒﺎﻥ،
ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻗﻄﻨﻲ 3/235 ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﺃﻳﻮﺏ ﺑﻦ ﺳﻮﻳﺪ، ﻋﻦ ﺳﻔﻴﺎﻥ
ﺍﻟﺜﻮﺭﻱ، ﻛﻼﻫﻤﺎ ﻋﻦ ﺃﻳﻮﺏ ﺍﻟﺴﺨﺘﻴﺎﻧﻲ، ﺑﻪ .
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। কুমারী
মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার
পিতা আমার অপছন্দ সত্বেও বিয়ে দিয়েছে,
তখন রাসূল সাঃ সে মেয়েকে অধিকার দিলেন,
[যাকে ইচ্ছে বিয়ে করতে পারে বা এ বিয়ে
রাখতেও পারে]। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস
নং-২৪৬৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস
নং-১৮৭৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৬,
সুনানুল কুবরা নাসায়ী, হাদীস নং-৫৩৬৬,
সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৬৬}
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺑُﺮَﻳْﺪَﺓَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺟَﺎﺀَﺕْ ﻓَﺘَﺎﺓٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ : ” ﺇِﻥَّ ﺃَﺑِﻲ ﺯَﻭَّﺟَﻨِﻲ ﺍﺑْﻦَ ﺃَﺧِﻴﻪِ، ﻟِﻴَﺮْﻓَﻊَ ﺑِﻲ
ﺧَﺴِﻴﺴَﺘَﻪُ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻗَﺪْ ﺃَﺟَﺰْﺕُ ﻣَﺎ ﺻَﻨَﻊَ ﺃَﺑِﻲ،
ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺃَﺭَﺩْﺕُ ﺃَﻥْ ﺗَﻌْﻠَﻢَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀُ ﺃَﻥْ ﻟَﻴْﺲَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺂﺑَﺎﺀِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮِ ﺷَﻲْﺀٌ “
হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
জনৈক মহিলা নবীজী সাঃ এর কাছে এসে বলল,
আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে
বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
রাবী বলেন, তখন রাসূল সাঃ বিষয়টি মেয়ের
ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, [অর্থাৎ ইচ্ছে
করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে
ভেঙ্গেও দিতে পারবে] তখন মহিলাটি বললেন,
আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে
নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন
জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের
[চূড়ান্ত] মতের অধিকার নেই্ {সুনানে ইবনে
মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন
রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী,
হাদীস নং-৩৫৫৫}
ﻓﻰ ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ- ﻟﻮ ﻓﻌﻞ ﺍﻷﺏ ﺃﻭ ﺍﻟﺠﺪ ﻋﻨﺪ ﻋﺪﻡ ﺍﻷﺏ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ
ﻟﻠﺼﻐﻴﺮ ﻭﺍﻟﺼﻐﻴﺮﺓ ﺣﻖ ﺍﻟﻔﺴﺦ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﺒﻠﻮﻍ، ﻭﺇﻥ ﻓﻌﻞ ﻏﻴﺮﻫﻤﺎ ﻓﻠﻬﻤﺎ
ﺃﻥ ﻳﻔﺴﺨﺎ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﺒﻠﻮﻍ. ‏(ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻨﻜﺎﺡ، ﺑﺎﺏ ﺍﻟﻮﻟﻰ،
ﻣﻄﻠﺐ ﻣﻬﻢ ﻫﻞ ﻟﻠﻌﺼﻤﺔ ﺗﺰﻭﻳﺞ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﻏﻴﺮ ﻛﻒﺀ
ﻟﻪ؟- 4/174 )
৩ নং এর জবাব
বিয়ের জন্য মেয়েকে দেখা জায়েজ কতিপয়
শর্ত সাপেক্ষে। যথা-
১- মেয়ের মাহরাম কেউ উপস্থিত থাকা।
২- বেশি দেরী না করা।
৩- অযথা আলাপে নিমগ্ন না হওয়া।
৪- বিয়ে করার উদ্দেশ্যে দেখা।
৫- এক নজর দেখা।
তবে সবচে’উত্তম পদ্ধতি হল, পর্দার আড়াল
থেকে দেখা। সামনে না যাওয়া। কারণ এভবে
ঘটা করে এসে একাকি ছেলে ও মেয়ে দীর্ঘক্ষণ
একসাথে বসে কথাবার্তা বলার দ্বারা
গোনাহের দরজা খুলে যায়। বেলেল্লেপনা,
অশ্লীলতা ও মেয়েদের অপমান করার অবস্থা
তৈরী হয়।
আমাদের দেশে প্রচলিত কন্যা দেখা পদ্ধতি
পুরোটাই শরিয়ত গর্হিত পদ্ধতি। যেভাবে
মেয়েকে দেখা হয়, যেন বাজার থেকে গরু
কিনতে যাওয়া হয়েছে। হাত, পা, চুল, হাটা-
চলা, কথা-লেখা যেভাবে পরীক্ষা করা হয় তা
কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এভাবে কন্যা
দেখা শরীয়ত গর্হিত কর্ম হওয়ার সাথে সাথে
মানবতার খেলাফও।
এভাবে ঢাকঢোল পিটিয়ে একজন মেয়েকে দেখে
আসার পর যখন পাত্রপক্ষ না করে দেয়, তখন
একজন মেয়ের মানসিক অবস্থা কতটা ভেঙ্গে
পরে, তা কেবল ভুক্তভোগীই বুঝতে পারে।
ইসলাম কনেকে দেখার অনুমতি প্রদান করেছে
বলে এটিকে বাধ্য করে দেয়নি। কনেকে
দেখতেই হবে বিয়ে করার জন্য এমন কোন
বাধ্যবাধকতা নেই। তাই দূর থেকে খবর নিয়ে,
বা না জানিয়ে লুকিয়ে দেখাই সর্বোত্তম
পন্থা হবে বর্তমান ফিতনা রোখার জন্য।
কিন্তু যদি বিয়ে করার ইচ্ছে না থাকে,
এমনিতেই দেখতে যায়, তাহলে তা হারাম হবে।
{ফাতাওয়া মাহমুদিয়া-১৬/৪৩-৪৬}
ﻋَﻦْ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻠَﻤَﺔَ، ﻗَﺎﻝَ : ﺧَﻄَﺒْﺖُ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً، ﻓَﺠَﻌَﻠْﺖُ ﺃَﺗَﺨَﺒَّﺄُ ﻟَﻬَﺎ، ﺣَﺘَّﻰ
ﻧَﻈَﺮْﺕُ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ ﻓِﻲ ﻧَﺨْﻞٍ ﻟَﻬَﺎ، ﻓَﻘِﻴﻞَ ﻟَﻪُ : ﺃَﺗَﻔْﻌَﻞُ ﻫَﺬَﺍ ﻭَﺃَﻧْﺖَ ﺻَﺎﺣِﺐُ
ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻳَﻘُﻮﻝُ: ‏« ﺇِﺫَﺍ ﺃَﻟْﻘَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓِﻲ ﻗَﻠْﺐِ ﺍﻣْﺮِﺉٍ ﺧِﻄْﺒَﺔَ
ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٍ، ﻓَﻠَﺎ ﺑَﺄْﺱَ ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﻈُﺮَ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ ‏» ‏(ﺳﻨﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ –
1864
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

এক বৈঠকে তিন তালাক দিলে কি এক তালাক পতিত হয়?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম,
একই সাথে একই বৈঠকে/মুহূর্তে কেউ তার
স্ত্রীকে তিন তালাক দিলে কি তিন তালাকই
হবে? নাকি এক তালাক?
হানাফী আলেমরা বলছে তিন তালাক হয়ে
যাবে, কিন্তু আহলে হাদীস ও সউদী আলেমরা
বলেছে একত্রে তিন তালাক বিদআত, তাই
এখানে এক তালাক গণ্য হবে হবে
( যেমনঃ কেউ যদি তার স্ত্রীকে বলে, “আমি
তোমাকে এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক,
সারা জীবনের জন্য তালাক দিলাম”, তাহলে
কি তার স্ত্রীর উপর তিন তালাকই পতিত
হবে? নাকি একই সাথে তিন তালাক দেয়ার
কারনে এক তালাক ধরা হবে ? )
মুফতী সাহেব কাছে অনুরোধ এখানে তালাক
তিন তালাক পতিত হয়েছে নাকি হয়নি
জানাবেন এবং প্রসিদ্ধ চার মাজহাবেরও এই
ব্যাপারে সিদ্ধান্ত/ মতামত জানাবেন
জাযাকাল্লাহ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
ঢাকা

উত্তর

ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
কুরআন হাদীস ও ইজমায়ে উম্মাহ দ্বারা তিন
তালাকে তিন তালাক পতিত হবার কথা
প্রমানিত। এর উল্টো বিষয় কোন সহীহ হাদীস
দ্বারাই প্রমাণিত নয়।
এটি একটি হাস্যকর কথা যে, কোন বিষয় বিদআত
হলে বা নাজায়েজ হলে উক্ত কাজটি করার
দ্বারা কাজটি সম্পাদিত হয় না মর্মে ফাতওয়া
প্রদান করা।
যেমন জিনা করা হারাম, এখন কেউ জিনা
করলে কি জিনা হবে না? খুন করা হারাম তাই
খুন করলে খুন হবে না?
তেমনি এক বাক্যে বা এক বৈঠকে তিন তালাক
দেয়া হারাম কিন্তু দিলে পতিত হয়ে যাবে।
তিন কখনোই এক হয় না। এটি হাস্যকর কথা
ছাড়া আর কিছু নয়। তিন সর্বদাই তিন হয়।
কুরআনের পরিস্কার নির্দেশ-
ﺍﻟﻄَّﻠَﺎﻕُ ﻣَﺮَّﺗَﺎﻥِۖ ﻓَﺈِﻣْﺴَﺎﻙٌ ﺑِﻤَﻌْﺮُﻭﻑٍ ﺃَﻭْ ﺗَﺴْﺮِﻳﺢٌ ﺑِﺈِﺣْﺴَﺎﻥٍۗ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ ﻟَﻜُﻢْ
ﺃَﻥ ﺗَﺄْﺧُﺬُﻭﺍ ﻣِﻤَّﺎ ﺁﺗَﻴْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥ ﻳَﺨَﺎﻓَﺎ ﺃَﻟَّﺎ ﻳُﻘِﻴﻤَﺎ ﺣُﺪُﻭﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪِۖ
ﻓَﺈِﻥْ ﺧِﻔْﺘُﻢْ ﺃَﻟَّﺎ ﻳُﻘِﻴﻤَﺎ ﺣُﺪُﻭﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻠَﺎ ﺟُﻨَﺎﺡَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻤَﺎ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺍﻓْﺘَﺪَﺕْ ﺑِﻪِۗ ﺗِﻠْﻚَ
ﺣُﺪُﻭﺩُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻌْﺘَﺪُﻭﻫَﺎۚ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺘَﻌَﺪَّ ﺣُﺪُﻭﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﺄُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤُﻮﻥَ
‏[ ٢: ٢٢٩ ]
তালাকে-‘রাজঈ’ হ’ল দুবার পর্যন্ত তারপর হয়
নিয়মানুযায়ী রাখবে, না হয় সহৃদয়তার সঙ্গে
বর্জন করবে। আর নিজের দেয়া সম্পদ থেকে
কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য জায়েয
নয় তাদের কাছ থেকে। কিন্তু যে ক্ষেত্রে
স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই এ ব্যাপারে ভয় করে যে,
তারা আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে
না, অতঃপর যদি তোমাদের ভয় হয় যে, তারা
উভয়েই আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে
না, তাহলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী যদি বিনিময়
দিয়ে অব্যাহতি নিয়ে নেয়, তবে উভয়ের মধ্যে
কারোরই কোন পাপ নেই। এই হলো আল্লাহ
কর্তৃক নির্ধারিত সীমা। কাজেই একে অতিক্রম
করো না। বস্তুতঃ যারা আল্লাহ কর্তৃক
নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করবে, তারাই জালেম।
{সূরা বাকারা-২২৯}
এইতো গেল দুই তালাকের বিধান। এরপর আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন তিন তালাক প্রদানের বিধান
ঘোষণা করে ইরশাদ করেন-
ﻓَﺈِﻥ ﻃَﻠَّﻘَﻬَﺎ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﺤِﻞُّ ﻟَﻪُ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪُ ﺣَﺘَّﻰٰ ﺗَﻨﻜِﺢَ ﺯَﻭْﺟًﺎ ﻏَﻴْﺮَﻩُۗ ﻓَﺈِﻥ ﻃَﻠَّﻘَﻬَﺎ
ﻓَﻠَﺎ ﺟُﻨَﺎﺡَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻤَﺎ ﺃَﻥ ﻳَﺘَﺮَﺍﺟَﻌَﺎ ﺇِﻥ ﻇَﻨَّﺎ ﺃَﻥ ﻳُﻘِﻴﻤَﺎ ﺣُﺪُﻭﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪِۗ ﻭَﺗِﻠْﻚَ
ﺣُﺪُﻭﺩُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻳُﺒَﻴِّﻨُﻬَﺎ ﻟِﻘَﻮْﻡٍ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ ‏[ ٢: ٢٣٠ ]
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক
দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে
ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না
নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি
দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে
তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে
করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম
বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো
আল্লাহ কতৃꦣ2453; নির্ধারিত সীমা; যারা
উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়।
{সূরা বাকারা-২৩০}
পবিত্র কুরআনের উক্ত আয়াতের দ্বারা
পরিস্কার প্রমণিত হয় যে, তিন তালাক প্রদান
করলে তিন তালাকই পতিত হবে। এক তালাক নয়।
তিন তালাক বললে এক তালাক পতিত হবার কথা
একটি মুর্খতাসূলভ বক্তব্য ছাড়া আর কিছু নয়। যা
পরিস্কার আয়াতের খেলাফ। আর রাসূল সাঃ
থেকে এমন কোন হাদীস বর্ণিত হয়নি যে, কোন
ব্যক্তি তিন তালাক প্রদান করছে, আর রাসূল
সাঃ তাকে বলেছেন যে, এক্ষেত্রে তিন
তালাক হয়নি বরং এক তালাক হয়েছে। এমন
কোন ঘটনা না রাসূল সাঃ থেকে পাওয়া যায়,
না সাহাবীদের থেকে পাওয়া যায়।
এটি সম্পূর্ণই একটি ভুল ফাতওয়া।
সাহাবায়ে কিরাম,তাবেয়ীগণ,মুজতাহিদ ৪
ইমামগণ ও অধিকাংশ ওলামায়ে কিরাম, সেই
সাথে বর্তমান সৌদি আরবের নির্ভরযোগ্য সকল
ওলামায়ে কিরামগণ এক মজলিসে তিন তালাক
দিলে তিন তালাকই পতিত হয়, এক তালাক নয়
মর্মে ফতোয়া দিয়েছেন। এ বিষয়ে পূর্ণ
ইসলামের ইতিহাসে কোন গ্রহণযোগ্য আলেম
দ্বিমত পোষণ করেননি। কেবল মাত্র আল্লামা
ইবনে তাইমিয়্যা রহঃ ও তার শিষ্য আল্লামা
ইবনুল কাইয়্যুম রহঃ ব্যতিত। কিন্তু সকল উম্মতের
বিপরীত (যেখানে ইমাম চতুষ্টয়- ইমাম আবু
হানীফা রহঃ, ইমাম শা‘ফী রহঃ, ইমাম
মালেক রহঃ, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহঃ
অন্তর্ভূক্ত) এই দুই জনের সিদ্ধান্ত কখনোই
গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যা কুরআনের আয়াত
ও অগণিত হাদিস এবং সাহাবায়ে কিরামের
আমল দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। নিম্নে
কয়েকটি হাদীস পেশ করা হল।
(১)
ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﻠﻴﺚ ﻋﻦ ﻧﺎﻓﻊ ﻛﺎﻥ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺇﺫﺍ ﺳﺌﻞ ﻋﻤﻦ ﻃﻠﻖ ﺛﻼﺛﺎ ﻗﺎﻝ
ﻟﻮ ﻃﻠﻘﺖ ﻣﺮﺓ ﺃﻭ ﻣﺮﺗﻴﻦ ﻓﺄﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﺃﻣﺮﻧﻲ
ﺑﻬﺬﺍ ﻓﺈﻥ ﻃﻠﻘﺘﻬﺎ ﺛﻼﺛﺎ ﺣﺮﻣﺖ ﺣﺘﻰ ﺗﻨﻜﺢ ﺯﻭﺟﺎ ﻏﻴﺮﻙ
হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর
রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক
দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না
হওয়া’ (রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে
জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন-“যদি
তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে
‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই
ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ,রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে
এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন।
যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী
হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য
স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। {সহীহ বুখারী-২/৭৯২,
২/৮০৩}
(২)
ﻋﻦ ﻣﺠﺎﻫﺪ ﻗﺎﻝ ﻛﻨﺖ ﻋﻨﺪ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﻓﺠﺎﺀ ﺭﺟﻞ ﻓﻘﺎﻝ ﺇﻧﻪ ﻃﻠﻖ
ﺍﻣﺮﺃﺗﻪ ﺛﻼﺛﺎ. ﻗﺎﻝ ﻓﺴﻜﺖ ﺣﺘﻰ ﻇﻨﻨﺖ ﺃﻧﻪ ﺭﺍﺩﻫﺎ ﺇﻟﻴﻪ ﺛﻢ ﻗﺎﻝ ﻳﻨﻄﻠﻖ
ﺃﺣﺪﻛﻢ ﻓﻴﺮﻛﺐ ﺍﻟﺤﻤﻮﻗﺔ ﺛﻢ ﻳﻘﻮﻝ ﻳﺎ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﻳﺎ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﻭﺇﻥ
ﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ ‏( ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﺘَّﻖِ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳَﺠْﻌَﻞْ ﻟَﻪُ ﻣَﺨْﺮَﺟًﺎ ‏) ﻭﺇﻧﻚ ﻟﻢ ﺗﺘﻖ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻠﻢ
ﺃﺟﺪ ﻟﻚ ﻣﺨﺮﺟﺎ ﻋﺼﻴﺖ ﺭﺑﻚ ﻭﺑﺎﻧﺖ ﻣﻨﻚ ﺍﻣﺮﺃﺗﻚ
অর্থ: হযরত মুজাহিদ রহঃ. বলেন,আমি ইবনে
আব্বাস রাঃ-এর পাশে ছিলাম। সে সময় এক
ব্যক্তি এসে বলেন-‘সে তার স্ত্রীকে তিন
তালাক দিয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ চুপ
করে রইলেন। আমি মনে মনে ভাবছিলাম-হয়ত
তিনি তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার কথা
বলবেন (রুজু করার হুকুম দিবেন)। কিছুক্ষণ পর
ইবনে আব্বাস রা. বলেন,তোমাদের অনেকে
নির্বোধের মত কাজ কর;[তিন তালাক দিয়ে
দাও!] তারপর ‘ইবনে আব্বাস! ইবনে আব্বাস!
বলে চিৎকার করতে থাক। শুনে রাখ আল্লাহ
তা‘য়ালা বাণী-“যে ব্যক্তি আল্লাহ
তা‘য়ালাকে ভয় করে আল্লাহ তা‘য়ালা তার
জন্য পথকে খুলে দেন। তুমিতো স্বীয় রবের
নাফরমানী করেছো [তিন তালাক দিয়ে]। এ
কারণে তোমার স্ত্রী তোমার থেকে পৃথক হয়ে
গেছে। {সুনানে আবু দাউদ-১/২৯৯, হাদীস
নং-২১৯৯, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস
নং-১৪৭২০, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস
নং-১৪৩}
(৩)
ﻋﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺃﻧﻪ ﺑﻠﻐﻪ ﺃﻥ ﺭﺟﻼ ﻗﺎﻝ ﻟﻌﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺇﻧﻲ ﻃﻠﻘﺖ
ﺍﻣﺮﺃﺗﻲ ﻣﺎﺋﺔ ﺗﻄﻠﻴﻘﺔ ﻓﻤﺎﺫﺍ ﺗﺮﻯ ﻋﻠﻲ ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﻃﻠﻘﺖ
ﻣﻨﻚ ﻟﺜﻼﺙ ﻭﺳﺒﻊ ﻭﺗﺴﻌﻮﻥ ﺍﺗﺨﺬﺕ ﺑﻬﺎ ﺁﻳﺎﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﻫﺰﻭﺍ
অর্থ: হযরত ইমাম মালেক রহঃ এর কাছে এ
বর্ণনা পৌঁছেছে যে, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে
আব্বাস রাঃ এর কাছে জিজ্ঞাসা করল-“আমি
আমার স্ত্রীকে একশত তালাক দিয়েছি,এ
বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি? তখন ইবনে আব্বাস
রা. বলেন, তুমি যা দিয়েছ তা থেকে তিন
তালাক তোমার স্ত্রীর উপর পতিত হয়েছে,আর
সাতানব্বই তালাকের মাধ্যমে তুমি আল্লাহ
তা‘য়ালার সাথে উপহাস করেছ। [মুয়াত্তা
মালেক;১৯৯, হাদীস নং-২০২১]।
(৪)
ﻋﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺃﻧﻪ ﺑﻠﻐﻪ ﺃﻥ ﺭﺟﻼ ﺟﺎﺀ ﺇﻟﻰ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﻓﻘﺎﻝ
ﺇﻧﻲ ﻃﻠﻘﺖ ﺍﻣﺮﺃﺗﻲ ﺛﻤﺎﻧﻲ ﺗﻄﻠﻴﻘﺎﺕ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﻓﻤﺎﺫﺍ ﻗﻴﻞ ﻟﻚ
ﻗﺎﻝ ﻗﻴﻞ ﻟﻲ ﺇﻧﻬﺎ ﻗﺪ ﺑﺎﻧﺖ ﻣﻨﻲ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﺻﺪﻗﻮﺍ
অর্থ: হযরত ইমাম মালেক রহঃ এর কাছে এ
বর্ণনা পৌঁছেছে যে, এক ব্যক্তি হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ এর দরবারে
উপস্থিত হয়ে বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে আট
তালাক দিয়েছি। হযরত ইবনে মাসউদ রাঃ
বলেন,লোকেরা তোমাকে কি বলেছে? সে
উত্তর দিল,তারা বলল ‘‘তোমার স্ত্রী
‘বায়ানা’ তালাক প্রাপ্ত হয়ে গেছে’’ তখন
হযরত ইবনে মাসউদ রাঃ বলেন,তারা সত্য
বলেছে। অর্থাৎ তিন তালাক পতিত হয়েছে।
(মুয়াত্তা মালিক; পৃঃ-১৯৯, হাদীস নং-২০২২]
(৫)
ﻧﺎ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﻴﺪ ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ ﻧﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺷﺎﺫﺍﻥ ﺍﻟﺠﻮﻫﺮﻱ ﻧﺎ
ﻣﻌﻠﻰ ﺑﻦ ﻣﻨﺼﻮﺭ ﻧﺎ ﺷﻌﻴﺐ ﺑﻦ ﺭﺯﻳﻖ ﺃﻥ ﻋﻄﺎﺀ ﺍﻟﺨﺮﺍﺳﺎﻧﻲ ﺣﺪﺛﻬﻢ
ﻋﻦ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻗﺎﻝ ﻧﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺃﻧﻪ ﻃﻠﻖ ﺍﻣﺮﺃﺗﻪ ﺗﻄﻠﻴﻘﺔ ﻭﻫﻲ
ﺣﺎﺋﺾ ﺛﻢ ﺃﺭﺍﺩ ﺃﻥ ﻳﺘﺒﻌﻬﺎ ﺑﺘﻄﻠﻴﻘﺘﻴﻦ ﺃﺧﺮﺍﻭﻳﻦ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻘﺮﺋﻴﻦ ﻓﺒﻠﻎ ﺫﻟﻚ
ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻓﻘﺎﻝ : ﻳﺎ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻣﺎ ﻫﻜﺬﺍ
ﺃﻣﺮﻙ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻧﻚ ﻗﺪ ﺃﺧﻄﺄﺕ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ ﺃﻥ ﺗﺴﺘﻘﺒﻞ ﺍﻟﻄﻬﺮ ﻓﻴﻄﻠﻖ
ﻟﻜﻞ ﻗﺮﻭﺀ ﻗﺎﻝ ﻓﺄﻣﺮﻧﻲ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ
ﻓﺮﺍﺟﻌﺘﻬﺎ ﺛﻢ ﻗﺎﻝ ﺇﺫﺍ ﻫﻲ ﻃﻬﺮﺕ ﻓﻄﻠﻖ ﻋﻨﺪ ﺫﻟﻚ ﺃﻭ ﺃﻣﺴﻚ ﻓﻘﻠﺖ ﻳﺎ
ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺭﺃﻳﺖ ﻟﻮ ﺃﻧﻲ ﻃﻠﻘﺘﻬﺎ ﺛﻼﺛﺎ ﺃﻛﺎﻥ ﻳﺤﻞ ﻟﻲ ﺃﻥ ﺃﺭﺍﺟﻌﻬﺎ
ﻗﺎﻝ ﻻ ﻛﺎﻧﺖ ﺗﺒﻴﻦ ﻣﻨﻚ ﻭﺗﻜﻮﻥ ﻣﻌﺼﻴﺔ
অর্থ: হযরত হাসান রাঃ বলেন,হযরত ইবনে উমর
রাঃ আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে,তিনি
আপন স্ত্রীকে হায়য অবস্থায় এক তালাক
দিয়েছিলেন, অতঃপর ইচ্ছা করলেন যে, দুই
তুহুরে [হায়য থেকে পবিত্র অবস্থায়] অবশিষ্ট দুই
তালাক দিয়ে দিবেন। হুজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বিষয়ে অবগত হওয়ার
পর বলেন-ইবনে ওমর! এভাবে আল্লাহ তা‘য়ালা
তোমাকে হুকুম দেননি। তুমি সুন্নাতের বিপরীত
কাজ করেছ [হায়য অবস্থায় তালাক দিয়েছ]।
তালাকের শরিয়ত সমর্থিত পদ্ধতি হল,‘তুহুর’
পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা। প্রত্যেক
‘তুহুরে’ এক তালাক দেয়া। তার পর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘রুজু’ করার
নির্দেশ দিলেন। এ জন্য আমি ‘রুজু’ করে
নিয়েছি। অতঃপর তিনি বললেন,সে পবিত্র
হওয়ার পর তোমার এখতিয়ার থাকবে। চাইলে
তুমি তালাকও দিতে পারবে,বা তাকে নিজের
কাছে রাখতে পারবে।
হযরত ইবনে উমর রাঃ বলেন-তারপর আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম-
ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যদি তিন তালাক দেই
তখনও কি ‘রুজু’ করার অধিকার থাকবে? হুজুর
সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- না।
তখন স্ত্রী তোমার কাছ থেকে পৃথক হয়ে যাবে।
এবং তোমার এই কাজ (এক সাথে তিন
তালাক দেয়া) গুনাহের কাজ সাব্যস্ত হবে।
{সুনানে দারা কুতনী-২/৪৩৮, হাদীস নং-৮৪,
যাদুল মাআদ-২/২৫৭, সুনানে বায়হাকী কুবরা,
হাদীস নং-১৪৭৩২}
লক্ষ্য করুন উল্লেখিত হাদিস সমূহে তিন তালাক
দ্বারা তিন তালাকই পতিত হওয়ার নির্দেশ
রয়েছে। এ ছাড়াও আরো অনেক হাদিস
সুস্পষ্টভাবে এ বিষয়ের উপর প্রমাণ বহন করে
যে,তিন তালাক দ্বারা তিন তালাকই পতিত
হবে এক তালাক নয়।
সৌদী উলামাদের সর্বসম্মত ফাতওয়া
সৌদী আরবের গ্রহণযোগ্য গবেষক আলেমগণ
গবেষণা করে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, তিন
তালাকে তিন তালাকই পতিত হবে। সৌদী
ওলামাদের নির্ধারিত সিদ্ধান্তের কপি
নিম্নরূপ-
ﺑﻌﺪ ﺍﻻﻃﻼﻉ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺒﺤﺚ ﺍﻟﻤﻘﺪﻡ ﻣﻦ ﺍﻷﻣﺎﻧﺔ ﺍﻟﻌﺎﻣﺔ ﻟﻬﻴﺌﺔ ﻛﺒﺎﺭ
ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻭﺍﻟﻤﻌﺪ ﻣﻦ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﻠﺠﻨﺔ ﺍﻟﺪﺍﺋﻤﺔ ﻟﻠﺒﺤﻮﺙ ﻭﺍﻹﻓﺘﺎﺀ ﻓﻲ ﻣﻮﺿﻮﻉ
‏( ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺍﻟﺜﻼﺙ ﺑﻠﻔﻆ ﻭﺍﺣﺪ ) .
ﻭﺑﻌﺪ ﺩﺭﺍﺳﺔ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ، ﻭﺗﺪﺍﻭﻝ ﺍﻟﺮﺃﻱ ، ﻭﺍﺳﺘﻌﺮﺍﺽ ﺍﻷﻗﻮﺍﻝ ﺍﻟﺘﻲ
ﻗﻴﻠﺖ ﻓﻴﻬﺎ ، ﻭﻣﻨﺎﻗﺸﺔ ﻣﺎ ﻋﻠﻰ ﻛﻞ ﻗﻮﻝ ﻣﻦ ﺇﻳﺮﺍﺩ – ﺗﻮﺻﻞ
ﺍﻟﻤﺠﻠﺲ ﺑﺄﻛﺜﺮﻳﺘﻪ ﺇﻟﻰ ﺍﺧﺘﻴﺎﺭ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺑﻮﻗﻮﻉ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺍﻟﺜﻼﺙ ﺑﻠﻔﻆ ﻭﺍﺣﺪ
ﺛﻼﺛﺎ ___ ﺍﻟﺦ ‏( ﻣﺠﻠﺔ ﺍﻟﺒﺤﻮﺙ ﺍﻹﺳﻼﻣﻴﺔ، ﺍﻟﻤﺠﻠﺔ ﺍﻷﻭﻝ، ﺍﻟﻌﺪﺩ
ﺍﻟﺜﺎﻟﺚ، ﺳﻨﺔ 1397 ﻩ )
অর্থ: লাজনাতুত দায়িমা লিল বুহুস ওয়াল ইফতা
পরিষদ সৌদী আরব কর্তৃক নির্বাচিত ‘এক শব্দে
তিন তালাক’ বিষয়ে গবেষণা কর্মে দায়িত্বরত
শীর্ষ ওলামাদের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত
গবেষণাপত্র ও এ বিষয়ে গভীর অধ্যয়ন,প্রতিটি
উক্তির বাছ বিচার ও তার পক্ষে-বিপক্ষে
উপস্থাপিত সকল প্রশ্নের উত্তর উত্থাপিত
হওয়ার পর অধিকাংশ ওলামায়ে কিরামের
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিষদ এই সিদ্ধান্তে
উপনিত হয় যে,এক শব্দে তিন তালাক দিলে
তিন তালাকই পতিত হবে। (মাজাল্লাতুল
বুহুসিল ইসলামিয়্যা, প্রথম খন্ড, তৃতীয় সংখ্যা,
১৩৯৭ হিজরী)
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা আশা করি এ
বিষয়টি পরিস্কার হয়ে গেছে যে, কুরআন ও
হাদীস ও উম্মতের ইজমায়ী সিদ্ধান্ত হল, তিন
তালাক এক বাক্যে প্রদান করুক, এক বৈঠকে
প্রদান করুক, বা একদিন প্রদান করুক, বা এক
মাসে প্রদান করুক, যেভাবেই তিন তালাক
প্রদান করুক, তিন তালাকই পতিত হবে।এক
তালাক নয়। যা কুরআন ও হাদীস ও উম্মতের
ইজমা দ্বারা প্রমাণিত।
আল্লাহ তাআলা ভুল মাসআলার উপর আমল করে
জিনার গোনাহ করা থেকে উম্মতে মুসলিমাকে
হিফাযত করুন। আমীন।

ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

স্ত্রী না শুনলে কি তালাক পতিত হয় না ?

প্রশ্ন

আস সালামুআলাইকুম সম্মানিত
মুফতি সাহেব আশা করি আল্লাহর রহমতে
ভালো আছেন হুজুর আমার বউয়ের সাথে
মোবাইলে আমার ঝগড়া হয় ঝগড়ার মধ্যে আমি
এভাবে বলি এক তালাক দুই তালাক তিন তালাক
হুজুর আমার বলেছে সেই কিছু সুনেনি হুজুর আমি
কাতারে থাকি হুজুর আমার একটা মেয়ে আছে
আমার শুশুর অনেক গরিব আমার বউ বলতেছে
আমার বাড়ি থেকে যাবেনা সে আরও বলে সে
এখানে মারা যাবে হুজুর আমি এখন কি করব
আমি অনেক টেনশনে আছি হুজুর আমি
মাদ্রাসার ছাএ ছিলাম আমি নামায পরি হুজুর
দয়া করে যানাবেন ।

উত্তর

ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
আপনি মাদরাসায় পড়লেতো আপনার কাছে
বিষয়টি পরিস্কার থাকার কথা। তারপরও
আমাদের কাছে কেন প্রশ্ন করছেন ভাই?
আপনি মাদরাসায় পড়ার পরও এমন বোকামী কি
করে করলেন? স্ত্রীর সাথে রাগারাগি হলেই
তালাক বলতে হবে একথা আপনাকে কে
শিখাল?
আর তালাক বললেও তিন তালাকই বলতে হবে
এটাই বা কার শিক্ষা?
দুইটা কাজই বোকামীসূলভ কাজ। একেতো ঝগড়া
হলেই তালাক দেয়া বাচ্চাদের মত কাজ।
আর যেখানে এক তালাক দিলেই স্ত্রী স্বামী
থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেখানে তিন
তালাক দেবার দরকার কি?
যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে রাখতে না
চায়, তাহলে এক তালাক দিলেইতো হয়। এক
তালাকে বাইন বললে, কিংবা এক তালাক
দিলে, ইদ্দত শেষে উক্ত মেয়ে আরেক স্থানে
বিবাহ বসতে পারে। সেখানে রাগ করে তিন
তালাক দেবার কোন মানে হয় না। অহেতুক ও
শিশুসূলভ কাজ।
কারো গলা কেটে ফেলার পর ভুল হয়েছে বলে
যেমন কোন ফায়দা নেই, তেমনি স্ত্রীকে তিন
তালাক দেবার পর ভুল হয়েছে বলার দ্বারাও
কোন ফায়দা নেই।
আপনার শ্ব্শুর গরীব, সন্তান আছে এসব কথা
কেন তালাকের মত জঘন্য শব্দ বলার আগে
খেয়াল হয়নি? কেন এমন শিশুসূলভ আচরণ করেন
আপনারা?
আমাদের দায়িত্ব বিধান বলে দেয়া। মানা না
মানা আপনার দায়িত্ব।
স্ত্রীকে তিন তালাক দেবার মাধ্যমে তিন
তালাক পতিত হয়ে যায়। স্ত্রী শুনুক আর না
শুনুক। তা’ই আপনার স্ত্রী তিন তালাকপ্রাপ্তা
হবার মাধ্যমে আপনার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
গেছে। এখন ইদ্দত শেষে আপনার স্ত্রীর যদি
অন্য কোথাও বিয়ে হয়। দ্বিতীয় স্বামীর সাথে
ঘর সংসার করা অবস্থায় কোন কারণে
তালাকপ্রাপ্তা হয়, তাহলে ইদ্দত শেষে আপনি
আবার উক্ত মেয়েলোককে বিবাহ করতে
পারবেন। এছাড়া আর কোন গত্যান্তর নেই।
ﻓَﺈِﻥ ﻃَﻠَّﻘَﻬَﺎ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﺤِﻞُّ ﻟَﻪُ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪُ ﺣَﺘَّﻰٰ ﺗَﻨﻜِﺢَ ﺯَﻭْﺟًﺎ ﻏَﻴْﺮَﻩُۗ ﻓَﺈِﻥ ﻃَﻠَّﻘَﻬَﺎ
ﻓَﻠَﺎ ﺟُﻨَﺎﺡَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻤَﺎ ﺃَﻥ ﻳَﺘَﺮَﺍﺟَﻌَﺎ ﺇِﻥ ﻇَﻨَّﺎ ﺃَﻥ ﻳُﻘِﻴﻤَﺎ ﺣُﺪُﻭﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪِۗ ﻭَﺗِﻠْﻚَ
ﺣُﺪُﻭﺩُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻳُﺒَﻴِّﻨُﻬَﺎ ﻟِﻘَﻮْﻡٍ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ ‏[ ٢: ٢٣٠ ]
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক
দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে
ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না
নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি
দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে
তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে
করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম
বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো
আল্লাহ কতৃꦣ2453; নির্ধারিত সীমা; যারা
উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়।
{সূরা বাকারা-২৩০}
ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﻠﻴﺚ ﻋﻦ ﻧﺎﻓﻊ ﻛﺎﻥ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺇﺫﺍ ﺳﺌﻞ ﻋﻤﻦ ﻃﻠﻖ ﺛﻼﺛﺎ ﻗﺎﻝ
ﻟﻮ ﻃﻠﻘﺖ ﻣﺮﺓ ﺃﻭ ﻣﺮﺗﻴﻦ ﻓﺄﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﺃﻣﺮﻧﻲ
ﺑﻬﺬﺍ ﻓﺈﻥ ﻃﻠﻘﺘﻬﺎ ﺛﻼﺛﺎ ﺣﺮﻣﺖ ﺣﺘﻰ ﺗﻨﻜﺢ ﺯﻭﺟﺎ ﻏﻴﺮﻙ
হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর
রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক
দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না
হওয়া’ (রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে
জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন-“যদি
তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে
‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই
ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ,রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে
এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন।
যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী
হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য
স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। {সহীহ বুখারী-২/৭৯২,
২/৮০৩}

ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

মেয়ের অমতে তাবীজ করে বিবাহ দিলে উক্ত বিয়ে ভেঙ্গে ফেলা ঠিক হবে কি?

প্রশ্ন

জনাব
আসসালামুআলাইকুম
দয়া করে উত্তর দিলে অনেক খুশি হবো এবং
অাল্লাহ এর উত্তম প্রতিদান আপনাকে প্রদান
করবেন মেয়ের অমতে জোর করে বা তাবিজ-
কবজ করে বিয়েতে রাজি করানো হলে বিয়ে
সহি হবে কিনা?
কিছুদিন পূর্বে আমার এক নিকট আত্নীয়ের
মেয়ের বিয়ের জন্য এক ইতালি প্রবাসি ছেলে
ঠিক করা হয়েছিলো, কিন্তু ছেলে দেখার পর
মেয়ে জোরালো ভাবে জানালো সে এই
ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি নয়। কিন্তু এর
পূর্বে একটি ছেলে তার পরিবারের কাছে
তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল যার
পরিবারের (মা-ভাই বোন) সাথে মেয়ে
বিভিন্ন সময় যোগাযোগ রক্ষা করে এসেছিলো
যাকে সে বিয়ে করতে রাজি।​ কিন্তু মেয়ের
বাবা-মা এই কথার বিরোধীতা করে মেয়েকে
জানায় ইতালি প্রবাসী ছেলের সাথেই তাকে
বিয়েতে রাজি হতে হবে। এই অবস্থায়
কোনভাবেই যখন মেয়েকে রাজি করানো
গেলনা তখন একজন মাওলানা যিনি জ্বীন
দ্বারা বিভিন্ন চিকিৎসা করেন মেয়ের বাবা
তার শরনাপন্ন হন এবং তার মেয়ে যেনো
পূর্বের ঐ ছেলের প্রস্তাবের সব বিষয় এবং তার
পরিবারের (মা-ভাই বোন) সাথে মেয়ে
বিভিন্ন সময় যোগাযোগের বিষয় গুলো ভুলে
যায় সে জন্য তদবির চান। ঐ মাওলানা এই
বিষয়ে ঐ মেয়েকে তদবির দিলে মেয়ে ইতালী
থেকে আগত ঐ ছেলের ব্যাপারে রাজি হয় এবং
যাচাই করে দেখা গেলো মেয়ে আসলেই পূর্বের
ছেলের সব বিষয় ভুলে গেছে। কিছুদিনের মধ্যে
মেয়েটির সাথে ইতালী থেকে আগত ছেলেটির
বিয়ে হয়।
আমার প্রশ্ন হলো এই বিয়েটি সহি হয়েছে
কিনা? এবং জ্বীন দ্বারা এই ভাবে চিকিৎসা
করানো যায় কিনা, করলে এই ভাবে মত
পাল্টানো কতটুকু যুক্তিযুক্ত? এই চিকিৎসার
নির্দিষ্ট কোন মেয়াদ থাকে কি? মেয়াদের পর
মেয়েটি র্পূবের ঐ ছেলেটিকে বিয়ে করতে
চাইলে কিভাবে সম্বব?
আপনার উত্তরের অাশায় রইলাম।


উত্তর

ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
উপরোক্ত প্রশ্নে মূল বিষয় হল, দু’টি। যথা-
১- প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের অমতে তার বিবাহ
দেয়ার হুকুম কী?
২- পিতামাতা বিবাহ দেয়ার পর মেয়েটি
বিবাহ ভেঙ্গে দিবে কি না?
প্রথম বিষয়ের সমাধান হল, প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের
অমতে তাকে কোথাও বিবাহ দেয়া ইসলাম
সমর্থন করে না। একাজ থেকে বিরত থাকা
কর্তব্য। তবে এভাবে জোরপূর্বক বিবাহ হলেও
বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়।
বরং বিবাহের সময় মেয়ের সম্মতি নেয়া
জরুরী।
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ؛ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ،
ﻗَﺎﻝَ : ‏«ﺍﻟْﺄَﻳِّﻢُ ﺃَﺣَﻖُّ ﺑِﻨَﻔْﺴِﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﻭَﻟِﻴِّﻬَﺎ .
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে
বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার
ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক
হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮,
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে
আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ,
হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস
নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮,
সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে
হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী,
হাদীস নং-৩৫৭৬}
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﻗَﺎﻝَ: ” ﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺇِﻥَّ ﺃَﺑِﻲ ﻭَﻧِﻌْﻢَ
ﺍﻟْﺄَﺏُ ﻫُﻮَ، ﺧَﻄَﺒَﻨِﻲ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻋَﻢُّ ﻭَﻟَﺪِﻱ ﻓَﺮَﺩَّﻩُ، ﻭَﺃَﻧْﻜَﺤَﻨِﻲ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻛَﺎﺭِﻫَﺔٌ.
ﻓَﺒَﻌَﺚَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺑِﻴﻬَﺎ، ﻓَﺴَﺄَﻟَﻪُ ﻋَﻦْ
ﻗَﻮْﻟِﻬَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺻَﺪَﻗَﺖْ، ﺃَﻧْﻜَﺤْﺘُﻬَﺎ ﻭَﻟَﻢْ ﺁﻟُﻬَﺎ ﺧَﻴْﺮًﺍ. ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﻟَﺎ ﻧِﻜَﺎﺡَ ﻟَﻚِ، ﺍﺫْﻫَﺒِﻲ ﻓَﺎﻧْﻜِﺤِﻲ ﻣَﻦْ ﺷِﺌْﺖِ
হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে
রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে
আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম
পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের
প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে
দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে
চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে
রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে
পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে
এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার
ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন,
“এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে
করে নাও”। {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস
নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস
নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,
হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি
আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺑُﺮَﻳْﺪَﺓَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻗَﺎﻝَ: ﺟَﺎﺀَﺕْ ﻓَﺘَﺎﺓٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ : ” ﺇِﻥَّ ﺃَﺑِﻲ ﺯَﻭَّﺟَﻨِﻲ ﺍﺑْﻦَ ﺃَﺧِﻴﻪِ، ﻟِﻴَﺮْﻓَﻊَ ﺑِﻲ
ﺧَﺴِﻴﺴَﺘَﻪُ، ﻗَﺎﻝَ: ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ: ﻗَﺪْ ﺃَﺟَﺰْﺕُ ﻣَﺎ ﺻَﻨَﻊَ
ﺃَﺑِﻲ،ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺃَﺭَﺩْﺕُ ﺃَﻥْ ﺗَﻌْﻠَﻢَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀُ ﺃَﻥْ ﻟَﻴْﺲَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺂﺑَﺎﺀِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮِ ﺷَﻲْﺀٌ

হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
জনৈক মহিলা নবীজী সাঃ এর কাছে এসে বলল,
আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে
বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
রাবী বলেন, তখন রাসূল সাঃ বিষয়টি মেয়ের
ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, [অর্থাৎ ইচ্ছে
করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে
ভেঙ্গেও দিতে পারবে] তখন মহিলাটি বললেন,
আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে
নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন
জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের
[চূড়ান্ত] মতের অধিকার নেই্ {সুনানে ইবনে
মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন
রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী,
হাদীস নং-৩৫৫৫}
এ সমস্ত হাদীস প্রমাণ করে, মেয়ের অমতে
তাকে তাবীজ কবচ করে কোথাও বিবাহ দেয়া
ইসলামী শরীয়ত সমর্থিত নয়। কিন্তু শরয়ী শর্ত
মেনে সঠিক পদ্ধতিতে বিবাহ সম্পন্ন হয়ে
গেলে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়।
দ্বিতীয় বিষয় হল, পিতা মাতা সন্তানের জন্য
স্বাভাবিকভাবে কল্যাণকামী ফায়সালাই করে
থাকেন। সন্তানের অমঙ্গল হোক তা
স্বাভাবিকভাবে পিতামাতা চাননা। আর
পিতা মাতা দুনিয়ার বাস্তবতা সম্পর্কে
ওয়াকিফহাল হওয়ায় তাদের নজরে এমন অনেক
কিছু থাকে, যা বয়স কম থাকায় সন্তানের
চোখে ধরা পড়ে না। তাই সন্তান অনেক সময়ই
ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে, আর সন্তানদের
বয়সের কমতির কারণে পিতামাতার
সিদ্ধান্তকে ভুল মনে হয়। কিন্তু বাস্তবে
পিতামাতার সিদ্ধান্তই সঠিক হয়ে থাকে
অনেক সময়। তাই সন্তানদের উচিত কল্যাণকামী
পিতামাতার সিদ্ধান্তকে মেনে নেয়া।
পিতামাতাকে কষ্ট না দেয়া।
তা’ই উপরোক্ত পরিস্থিতিতে যেহেতু পিতা
মাতা মেয়েকে এক পাত্রের সাথে বিবাহ
দিয়েই দিয়েছে, তাই উপরোক্ত বিবাহকে কোন
শরয়ী কারণ ছাড়া ভেঙ্গে ফেলা কিছুতেই
উচিত হবে না। এর দ্বারা যেমন একদিকে
পিতামাতাকে কষ্ট দেয়া হবে, অপরদিকে
স্বামী নিরাপরাধ হলে তার উপর জুলুম করা
হবে। তাই এ বিবাহ ভেঙ্গে ফেলা কিছুতেই
ঠিক হবে না।
আর তাবীজ কবচের প্রতিক্রিয়া কতদিন থাকে,
তা সংশ্লিষ্ট কবিরাজরা বলতে পারেন।
এসবের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের জানা
নেই।
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

বিয়ের পর স্বামী স্ত্রী এক সাথে থাকা ছাড়াই তালাক হয়ে গেলে আবার বিয়ে করার বিধান কী ?

প্রশ্ন

আমার পাশের বাড়ির একটা মেয়ে। সে গত তিন
সপ্তাহ আগে গোপনে বিবাহ করার পর তৃতীয়
দিনই তিন তালাকের মাধ্যমে ডিভোর্স হয়ে
যায়।গার্জিয়ানরা ডিভোর্সের জন্য বাধ্য
করে। বিবাহের পর মেয়ে বাবার বাড়িতেই
ছিলো, ইতিমধ্যে তাদের কোন শারিরিক
সম্পর্ক হয়নি। এখন প্রশ্ন হলো এ মেয়ের কি
ইদ্দত পালন করতে হবে? এখন তার গার্জিয়ানরা
আবার তার স্বামীর সাথে বিবাহ দিতে
চাচ্ছে।যদি তাই হয় তাহলে কি এ মেয়ের হিলা
লাগবে?এর পদ্ধতিটা কি হবে? একটু অনুগ্রহ করে
বলবেন প্লিজ।
প্রশ্নকর্তা- নাম ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।

উত্তর

ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
বিয়ের পর যদি স্বামী স্ত্রীর মাঝে
খালওয়াতে সহীহাহ তথা স্বামী স্ত্রী
একান্তে নির্জনে কিছু সময় বসবাসের সুযোগ
না পেয়ে থাকে, তারপর তিন তালাক দেয়া হয়,
তাহলে তালাকের শব্দের উপর নির্ভরশীল
তালাক কয়টি পতিত হয়েছে। এক্ষেত্রে দু’টি
সূরত হতে পারে। যথা-

স্বামী বলল, এক তালাক, দুই তালাক, তিন
তালাক। কিংবা বলল, তুমি তালাক, তুমি
তালাক, তুমি তালাক, কিংবা বলল, তালাক,
তালাক তালাক।
এভাবে তালাক দিলে শুধু এক তালাকই পতিত
হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। শেষের দুই তালাক
অহেতুক সাব্যস্ত হবে। কারণ যে স্ত্রীর সাথে
বিয়ের পর শারিরীক সম্পর্ক ছাড়াই তালাক
প্রদান করা হয়, সে এক তালাকের মাধ্যমেই
বাইন হয়ে যায়। তাই যখন স্বামী এক তালাক
বলেছে, তখনি স্ত্রী বাইন তালাকপ্রাপ্তা হয়ে
স্বামীর অধিকার থেকে পৃথক হয়ে গেছে। তাই
এরপরের দুই তালাক পতিতই হয়নি।
এভাবে তালাক দিয়ে থাকলে এখন যদি আবার
উক্ত স্বামী স্ত্রীকে ফেরত নিতে চায়, তাহলে
নতুন মোহর ধার্য করে নতুন করে বিয়ে করে
নিলেই হবে। কোন ইদ্দত পালন ও হিলা করতে
হবে না।

স্বামী বলল, এক, দুই তিন তালাক। কিংবা
তোমাকে তিন তালাক দিলাম, কিংবা তুমি
তিন তালাক।
এভাবে তালাক দিলে তিন তালাকই পতিত
হবে। কারণ তালাক বলা হয়েছে তিন শব্দ বলার
পর। তাই তিন বলার পর তালাক বলায় সর্বশেষ
শব্দের সাথে তালাক শব্দটি সংশ্লিষ্ট হয়ে
তিন তালাকই পতিত হয়ে যায়। আর বাকি
দু’টির ক্ষেত্রে তিন তালাক বলা হয়েছে একই
সাথে। তাই তালাক তিনটিই পতিত হয়ে যাবে।
তাই এখন আর উক্ত স্ত্রীকে প্রথম স্বামী গ্রহণ
করতে পারবে না।
হ্যাঁ, যদি স্বাভাবিকভাবে উক্ত স্ত্রীলোকের
অন্য কোথাও বিয়ে হয়, দ্বিতীয় স্বামীর সাথে
ঘর সংসার করা অবস্থায় কোন কারণে তালাক
হয়ে যায়। তাহলে তালাকের পর ইদ্দত পালন
শেষে আবার প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এছাড়া কোন সূরত
নেই।
ﺇﺫَﺍ ﻃَﻠَّﻖَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗَﻪُ ﺛَﻠَﺎﺛًﺎ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺪُّﺧُﻮﻝِ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﻗَﻌْﻦَ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﻓَﺈِﻥْ ﻓَﺮَّﻕَ
ﺍﻟﻄَّﻠَﺎﻕَ ﺑَﺎﻧَﺖْ ﺑِﺎﻟْﺄُﻭﻟَﻰ ﻭَﻟَﻢْ ﺗَﻘَﻊْ ﺍﻟﺜَّﺎﻧِﻴَﺔُ ﻭَﺍﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﻣِﺜْﻞُ ﺃَﻥْ ﻳَﻘُﻮﻝَ
ﺃَﻧْﺖِ ﻃَﺎﻟِﻖٌ ﻃَﺎﻟِﻖٌ ﻃَﺎﻟِﻖٌ ‏( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻄﻼﻕ، ﺍﻟْﻔَﺼْﻞُ
ﺍﻟﺮَّﺍﺑِﻊُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻄَّﻠَﺎﻕِ ﻗَﺒْﻞَ ﺍﻟﺪُّﺧُﻮﻝِ- 1/373 )
( ﻗَﻮْﻟُﻪُ : ﻃَﻠَّﻖَ ﻏَﻴْﺮَ ﺍﻟْﻤَﺪْﺧُﻮﻝِ ﺑِﻬَﺎ ﺛَﻠَﺎﺛًﺎ ﻭَﻗَﻌْﻦَ ‏) ﺳَﻮَﺍﺀٌ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻭْﻗَﻌْﺖ ﻋَﻠَﻴْﻚ
ﺛَﻠَﺎﺙَ ﺗَﻄْﻠِﻴﻘَﺎﺕٍ ﺃَﻭْ ﺃَﻧْﺖِ ﻃَﺎﻟِﻖٌ ﺛَﻠَﺎﺛًﺎ ‏( ﺍﻟﺒﺤﺮ ﺍﻟﺮﺍﺋﻖ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻄﻼﻕ،
ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﻃﻼﻕ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻤﺪﺧﻮﻝ ﺑﻬﺎ – 2/213 ، ﺍﻟﻨﻬﺮ ﺍﻟﻔﺎﺋﻖ، ﻛﺘﺎﺏ
ﺍﻟﻄﻼﻕ، ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﺪﺧﻮﻝ- 2/352
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

মোহরানা পরিশোধ ছাড়া স্ত্রীর সাথে রাত্রিযাপনের হুকুম কী ?

প্রশ্ন

আচ্ছালামু আলাইকুম,

প্রশ্ন-১ঃ বিয়ের পরে দেন মোহর দেয়া যাবে
কি?
প্রস্ন-১ঃ দেন মোহর পরিশোধ না করে সহবাস
করা যাবে কি?

উত্তর

ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
দেনমোহর বিয়ের আকদের পর প্রদান করাতে
কোন সমস্যা নেই। তবে সহবাসের পূর্বে প্রদান
করাই উত্তম। তবে যদি স্ত্রী দেনমোহর প্রদান
করা ছাড়াই সহবাসের অনুমতি প্রদান করে
তাহলে কোন সমস্যা নেই। বাকি স্ত্রী
দেনমোহর প্রদান করা ছাড়া প্রথম সহবাসের
পূর্বে বাঁধা প্রদান করতে পারবে। কিন্তু একবার
সহবাস হয়ে গেলে আর বাঁধা দিতে পারবে না।
কিন্তু স্বামীর জিম্মায় দেনমোহর আদায় না
করলে তা ঋণ হিসেবে বাকি থেকে যাবে।
স্ত্রী যদি উক্ত দেনমোহর মাফ না করে, আর
স্বামীও তা পরিশোধ না করে, তাহলে
কিয়ামতের ময়দানে স্বামীর অপরাধী সাব্যস্ত
হবে। তাই দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করে
দেয়া জরুরী।
ﻭَﺁﺗُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﺻَﺪُﻗَﺎﺗِﻬِﻦَّ ﻧِﺤْﻠَﺔًۚ ﻓَﺈِﻥ ﻃِﺒْﻦَ ﻟَﻜُﻢْ ﻋَﻦ ﺷَﻲْﺀٍ ﻣِّﻨْﻪُ ﻧَﻔْﺴًﺎ
ﻓَﻜُﻠُﻮﻩُ ﻫَﻨِﻴﺌًﺎ ﻣَّﺮِﻳﺌًﺎ ‏[ ٤ : ٤ ]
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে
দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে
অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে
ভোগ কর। [সূরা নিসা-৪]
ﻓَﻤَﺎ ﺍﺳْﺘَﻤْﺘَﻌْﺘُﻢ ﺑِﻪِ ﻣِﻨْﻬُﻦَّ ﻓَﺂﺗُﻮﻫُﻦَّ ﺃُﺟُﻮﺭَﻫُﻦَّ ﻓَﺮِﻳﻀَﺔًۚ ﻭَﻟَﺎ ﺟُﻨَﺎﺡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ
ﻓِﻴﻤَﺎ ﺗَﺮَﺍﺿَﻴْﺘُﻢ ﺑِﻪِ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِ ﺍﻟْﻔَﺮِﻳﻀَﺔِۚ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻠِﻴﻤًﺎ ﺣَﻜِﻴﻤًﺎ
‏[ ٤: ٢٤ ]
অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা গ্রহণ
করবে,তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর।
তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি
নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও।
নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। [সূরা
নিসা-২৪]
ﻭَﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﻭَﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕُ ﻣِﻦَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃُﻭﺗُﻮﺍ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏَ ﻣِﻦ
ﻗَﺒْﻠِﻜُﻢْ ﺇِﺫَﺍ ﺁﺗَﻴْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﺃُﺟُﻮﺭَﻫُﻦَّ ‏[ ٥: ٥ ]
তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান
নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী,
যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের
পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা
প্রদান কর। [সূরা মায়িদা-৫]
ﻭَﻟَﺎ ﺟُﻨَﺎﺡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺃَﻥ ﺗَﻨﻜِﺤُﻮﻫُﻦَّ ﺇِﺫَﺍ ﺁﺗَﻴْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﺃُﺟُﻮﺭَﻫُﻦَّ ‏[ ٦٠ : ١٠ ]
তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা
দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে
না। [সূরা মুমতাহিনা-১০]
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।