ফেইসবুকে ফেইক আইডি ব্যবহারের হুকুম কি ???

প্রশ্ন
ফেইসবুকে ফেইক আইডি ব্যবহারের হুকুম কি?
দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ হবো।

image

উত্তর :-

দ্বীনী প্রয়োজনে হলে জায়েজ আছে। তবে
অহেতুক কাউকে অপমানিত করার জন্য ফেইক আইডি ব্যবহার করা জায়েজ নয়।
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধকে
কৌশল প্রয়োগের স্থান বলেছেন। [বুখারী,
হাদীস নং-৩০২৯] রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ধোঁকা দেয়, সে আমাদের দলভূক্ত নয়। [সহীহ
মুসলিম, হাদীস নং-১০২]

ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

কারো আনলিমিটেড নেট লাইন হ্যাক করে ব্যবহার করা জায়েজ হবে কি ???

প্রশ্ন

কারো আনলিমিটেড নেট লাইন হ্যাক করে ব্যবহার করা জায়েজ হবে কি ???

Zodi ami Unlimited package
ase emon karo modem id and
password hack kore free net chalai tahole ki ta thik hobe? Unlimited
package proti mase nirdisto taka dite hoy. ekhon ami use krle ze taka
dibe na korle O sei taka dibe. but ami use krbo take na janiye seta ki
jayez hobe? I think na jayez sure hoyar jonno apnar mntobbo jana
dorkar…

image

উত্তর

ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
না, জায়েজ হবে না।কারো মালিকানাধীন
বস্তু তার অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা জায়েজ
নয়।
ﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ ﻣَﺎﻝُ ﺍﻣْﺮِﺉٍ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﻄِﻴﺐِ ﻧَﻔْﺲٍ ﻣِﻨْﻪُ
কারো সম্পদ তার অনুমতি ছাড়া কারো জন্য
জায়েজ হয় না। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস
নং-২০৬৯৫, সুনানে দারামী, হাদীস নং-২৮৮৬}
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইসলামী শরীয়তে পোশাক বিষয়ক নীতিমালা !!!!

💐💐💐 মাওলানা মুহাম্মদ জাকারিয়া আব্দুল্লাহ 💐💐💐

পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদা।
লজ্জাস্থান আবৃত রাখা এবং সুন্দর ও পরিপাটি থাকার চাহিদা মানুষের স্বভাবজাত। তদ্রূপ শীত-গ্রীষেমর প্রকোপ ও বাইরের ধুলোবালি থেকে শরীরকে রক্ষার জন্য তা একটি প্রয়োজনীয় আবরণ। তাই পোশাক আল্লাহ
তাআলার নেয়ামত। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে-
ﻳﺎ ﺑﻨﻲ ﺁﺩﻡ ﻗﺪ ﺍﻧﺰﻟﻨﺎ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﻟﺒﺎﺳﺎ ﻳﻮﺍﺭﻯ ﺳﻮﺁﺗﻜﻢ ﻭﺭﻳﺸﺎ ﻭﻟﺒﺎﺱ
ﺍﻝﺗﻘﻮﻯ ﺫﻟﻚ ﺧﻴﺮ ﺫﻟﻚ ﻣﻦ ﺁﻳﺖ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻌﻠﻬﻢ ﻳﺬﻛﺮﻭﻥ .
হে আদমের সন্তান্তসন্ততি! আমি তোমাদের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছি, তোমাদের দেহের যে অংশ প্রকাশ করা দুষণীয় তা ঢাকার
জন্য এবং তা সৌন্দর্য্যেরও উপকরণ। বস’ত তাকওয়ার যে পোষাক সেটাই সর্বোত্তম। এসব আল্লাহর নির্দেশনাবলির অন্যতম। যাতে মানুষ উপদেশ গ্রহণ করে।-সূরা আরাফ : ২৬

স্বভাগতভাবেই মানুষের মাঝে সতর ঢেকে রাখার প্রেরণা রয়েছে। স্বভাব ও রুচির বিকৃতি
না ঘটলে এর বিপরীত হয় না। এরপরও
শরীয়ত ‘সতর’ ঢাকাকে রুচি ও স্বভাবের উপর ছেড়ে দেয়নি, দ্বীনের অপরিহার্য বিধান বানিয়ে দিয়েছে। কারণ মানুষের স্বাভাবিক রুচি ও শালীনতাবোধকে সংরক্ষণ করার জন্যও সুনির্দিষ্ট নীতি ও নির্দেশনার প্রয়োজন।
অন্যথায় বিভিন্নভাবে তা বিনষ্ট হতে পারে।
অর্থের লালসা, খ্যাতির মোহ, প্রদর্শন-
প্রিয়তা ও নির্বিচার অনুকরণ মানুষের
শালীনতাবোধকেও পরিবর্তন করে দেয়।
বর্তমান সমাজ এর মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত।
পোষাক শুধু বাইরের বিষয় নয়, তা মনের
গতিবিধিকেও নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো পোষাক মানুষকে অহংকারী করে। কোনো পোষাক বিনয় দান করে। কোনটা উশৃঙ্খল হওয়ার উসকানী দেয় আর কোনটা করে শান্ত সমাহিত। হৃদয় ও আত্মার পবিত্রতা এবং বাহ্যিক আচার-আচরণেও পোষাকের প্রভাব
অনস্বীকার্য। এজন্য ইসলামী শরীয়তে লেবাস-
পোষাকের কিছু নীতি রয়েছে, যা অনুসরণ করে মানুষ পোষাকের কল্যাণ লাভ করতে পারে এবং পোষাকের অকল্যাণ থেকে রক্ষা পেতে পারে।
এ ধরনের কিছু মূলনীতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত
আলোচনা করা হল :
👇👇👇

১. সতর আবৃত করা
লেবাস অবশ্যই সতর-আবৃতকারী হতে হবে।
কুরআন মজীদের উপরোক্ত আয়াতের ‘যা
তোমাদের লজ্জাস্থানকে আবৃত
করে’ বাক্যাংশে এই মুলনীতির দিকেই ইঙ্গিত
করা হয়েছে। এর দ্বারা বোঝা যায়,পোষাকের
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য সতর ঢাকা।
ইসলামের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাযে সতর ঢাকা ফরয়। পুরুষের নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর মুখমণ্ডল, টাখনু পর্যন্ত পা ও
কব্জি পর্যন্ত হাত ছাড়া গোটা শরীর নামাযে আবৃত রাখা ফরয। তদ্রূপ গায়রে মাহরাম ও পরপুরুষের সামনে মুখমণ্ডলসহ গোটা শরীর আবৃত
রাখাও জরুরি। অতএব পোষাকের মাধ্যমে যাতে এই প্রয়োজন পূরণ হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা অপরিহার্য।
এত সংক্ষিপ্ত পোষাক পরিধান করা যে, সতর বা সতরের কিছু অংশ খোলা থাকে বা এত পাতলা কাপড় ব্যবহার করা যে, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দৃষ্টিগোচর হয়, পুরুষ মহিলা সবার জন্যই হারাম ও নিষিদ্ধ। তদ্রূপ এত আঁটসাঁট
পোষাক, যার উপর দিয়ে শরীরের আবরণীয়
অঙ্গসমূহ ফুটে ওঠে তাও বর্জনীয়। পুরুষের জন্য প্রচলিত জিন্সের প্যান্ট বা সাধারণ আঁট-সাট প্যান্ট পরিধান করা অনুচিত। উপরন’ তা পরা হয়
টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে, যা একটা হারাম কাজ। পশ্চিমাদের অনুকরণে মুসলিম মহিলাদের
মাঝেও যে পোষাকের প্রচলন ঘটছে তাতে
প্রশ্ন জাগে যে,তাদের কাছে পোষাকের দর্শন আসলে কী? শরীর আবৃত করা, না কিছু অংশআবৃত করে বাকি অংশ আরো প্রকাশিত করা। পোষাকের হাতা, আঁচল দিন দিন সংক্ষিপ্ত
হচ্ছে। অন্যদিকে কাঁধ ও গলার পরিধি
প্রশস্ত হচ্ছে। অর্থাৎ যত দিন যাচ্ছে পোষাক অধিকার হারাচ্ছে শরীরের উপর থেকে। ভেবে দেখা উচিত,ডারউইনপন্থী পশ্চিমা সভ্যতা যদি তার আদি অবস্থায় ফিরে যেতে চায় আমরাও কি তা চাইতে পারি?
প্যান্ট-শার্ট-টাই কখনো এদেশীয় পোষাক ছিল না। এটা ইউরোপ থেকে আমদানি হয়েছে।শরীয়তের নীতিমালার বিচারেও তা উত্তীর্ণ নয়। সুতরাং একজন আত্মমর্যাদাবান মুসলিম হিসেবে এই বেশ পরিহার করা উচিত।

২. সৃষ্টি-প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া
পুরুষের পোষাক পুরুষোচিত আর নারীর পোষাক নারীর উপযোগী হওয়া কাম্য। স্বভাবগতভাবেই পুরুস কে শক্তি ও দৃঢ়তা দেওয়া হয়েছে। কারণ তার কর্মক্ষেত্র হল বাইরের পৃথিবী। তাই কোমল ও বর্ণিল সাজসজ্জা পুরুষের প্রকৃতি ও
দায়িত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
পক্ষান্তরে নারীকে আল্লাহ তাআলা দান
করেছেন কোমলতা ও কমনীয়তা। মাতৃত্বের মমতা ও নারীত্বের লাজ- নম্রতাই হচ্ছে নারীর স্বভাব-সৌন্দর্য। পোষাকের বিষয়ে শরীয়তের নির্দেশনা নর-নারীর সৃষ্টি-প্রকৃতির সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। ইসলামে রেশমের পোষাক পুরুষের জন্য নিষেধ, কিন্তু  নারীর জন্য অনুমোদিত।
স্বর্ণের ব্যবহার নারীর জন্য জায়েয, কিন্তু পুরুষের জন্য হারাম। যেকোনো
রংয়ের কাপড় নারীরা পরিধান করতে
পারে, কিন্তুপুরুষের জন্য কিছু কিছু রং
অপছন্দনীয়। এ প্রসঙ্গে কিছু হাদীস উল্লেখ করা হল :

১.👇👇👇
তোমরা রেশমের কাপড় পরিধান করা না। কেননা , যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রেশম পরিধান করবে সে আখেরাতে তা থেকে বঞ্চিত হবে। –
সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৮৩৪; সহীহ
মুসলিম, হাদীস : ২০৬৯/১১

২. 👇👇👇
আমার উম্মতের পুরুষের জন্য রেশমের পোষাক ও স্বর্ণ হারাম করা হয়েছে আর তা হালাল করা হয়েছে মহিলাদের জন্য।-সুনানে
তিরমিযী, হাদীস : ১৭২০

৩. 👇👇👇
তোমরা সাদা কাপড় পরিধান কর। কেননা তা
তোমাদের উত্তম কাপড়ের অন্যতম আর তাতেই তোমাদের মৃতদেরকে কাফন দাও। -সুনানে আবু
দাউদ, হাদীস : ৪০৫৫

৩.
নারী-পুরুষ একে অন্যের সাদৃশ্য গ্রহণ নিষিদ্ধ
👇👇👇
এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে অত্যন্ত কঠোর
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীর
বেশধারণকারী পুরুষের উপর আর পুরুষের বেশধারণকারিনী নারীর উপর লানত করেছেন।-বুখারী, হাদীস :  ৩৮৮৫
বেশ ধারণ করার অন্যতম মাধ্যম হল পোষাক।
অতএব নারীর জন্য পুরুষের পোষাক পরিধান করা আর পুরুষের জন্য নারীর পোষাক পরিধান করা হারাম ও কবীরা গুনাহ। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত অন্য হাদীসে বলা হয়েছে, নারীর পোষাক পরিধানকারী পুরুষকে এবং পুরুষের পোষাক পরিধানকারী নারীকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন।-আবু
দাউদ, হাদীস : ৪০৯২
আজকাল অনেক নারীকে তো প্যান্ট ও টি- শার্টও পরতে দেখা যায়। এসব যে কেবল পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণের কারণেই হারাম তা নয়, নির্লজ্জতা, পর্দাহীনতা আর বিজাতির সামঞ্জস্যগ্রহণ ইত্যাদি বহু কারণেই তা হারাম ও কবীরা গুনাহ। কোনো কোনো সময় পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন মুসলিমদেশের নারীদের ছবি দেখা যায়, যাদের মাথায় ওড়না, কিন্তু শরীরে ইউরোপীয় সাজ।
বলাবাহুল্য, এটা ইসলামী আদর্শের
প্রতিনিধিত্ব নয়।

৪.ইসরাফ ও অপচয় থেকে বিরত থাকা উচিত
👇👇👇
‘ইসরাফ’ বা অপচয় সর্বক্ষেত্রেই নিন্দনীয়।পোষাক-পরিচ্ছদের বিষয়েও তা প্রযোজ্য। বিলাসিতা বা ফুটানির জন্য কিংবা শুধু শখের বসে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পোষাক ক্রয় করা অথবা সীমাতিরিক্ত উচ্চমূল্যের পোষাক ক্রয়
করা ইসলামে নিষেধ। বিশেষ বিশেষ সময়ে পরিধানের জন্য কিছুটা মূল্যবান পোষাক থাকা দুষণীয় নয়, তবে তা কখনো ইসরাফের আওতাভুক্ত না হওয়া চাই। তদ্রূপ কৃপণতাও কাম্য নয়। আবুল আহওয়াস তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এলাম। তখন আমার পরনে ছিল অতি নিম্নমানের পোষাক। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কি সম্পদ আছে? আমি বললাম, জ্বি হ্যাঁ। তিনি পুনরায়
জিজ্ঞাসা করলেন, কী সম্পদ আছে? আমি বললাম, সবধরনের সম্পদই আল্লাহ আমাকে দান করেছেন্তউট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, গোলাম ইত্যাদি। তখন তিনি ইরশাদ করলেন, ‘যখন আল্লাহ তাআলা তোমাকে সম্পদ দিয়েছেন
তখন তোমার উপর তাঁর নেয়ামতের ছাপ থাকা চাই ।’-আবু দাউদ, হাদীস :
৪০৫৭; নাসাঈ, হাদীস : ৫২৯৪
মোটকথা, অপচয় বা কৃপণতা কোনোটাই
গ্রহণযোগ্য নয়, প্রয়োজন ও সামর্থ্যের মাঝে ভারসাম্য বজায় রেখে লেবাস-পোষাক ব্যবহার করাই ইসলামের নির্দেশনা।

৫. অহংকার ও প্রদর্শনের মানসিকতা থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য
👇👇👇
অহংকার ও লোকদেখানোর মানসিকতা
সর্বাবস্থায় ও সকল কাজেই পরিত্যাজ্য।
লেবাস-পোষাকের মাধ্যমেও যেন এই ব্যাধি মানুষের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়েও হাদীস শরীফে সতর্ক করা হয়েছে।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি অহংকারবশত মাটিতে কাপড় টেনে টেনে চলে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না (রাগান্বিত থাকবেন)।-
বুখারী, হাদীস : ৫৭৯১;  মুসলিম, হাদীস :
২০৮৫/৪৪
জাহেলি যুগের অহংকারী লোকেরা মাটিতে কাপড় টেনে টেনে চলত। আমাদের সমাজেও
অনেককে লুঙ্গি, প্যান্ট ইত্যাদি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরতে দেখা যায়। অহংকারবশত হয়ে থাকলে এটা মারাত্মক কবীরা গুনাহ আর শুধু
অভ্যাস বা রেওয়াজের কারণে হলেও
নাজায়েয। অতএব সর্বাবস্থায় তা পরিত্যাজ্য। অন্য হাদীসে ইরশাদ হয়েছে, লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে যাবে তা (অর্থাৎ টাখনুর নিচের
সেই স্থান) জাহান্নামে জ্বলবে।-বুখারী, হা.
: ৫৭৮৭
মানুষকে দেখানোর জন্য বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য খুব জাঁকজমকপূর্ণ পোষাক বা ব্যতিক্রমী পোষাক পরিধান করাও শরীয়তে নিষেধ। ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে
প্রসিদ্ধির (উদ্দেশ্যে) পোষাক পরিধান করবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে লাঞ্ছনার
পোষাক পরিধান করাবেন।-আবু দাউদ,হাদীস :
৪০২৩;  ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩৬০৩/৩৬০৭

৬. পারিপাট্যের বিষয়ে সীমালঙ্ঘন করা যাবে না
👇👇👇
পরিষ্কার ও শালীন পোষাক পরিধান করা এবং চুল  ও দাড়ি পরিপাটি রাখা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নত ও নির্দেশনা।
হাদীস শরীফে আছে, নবীয়ে কারীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে
বসা ছিলেন, ইতিমধ্যে এক ব্যক্তি মসজিদে
প্রবেশ করল, যার চুল ও দাড়ি ছিল এলোমেলো। নবীজী তাকে হাতের ইশারায় পরিপাটি হয়ে
আসতে বললেন। তিনি পরিপাটি হয়ে এলেন।
নবীজী তখন ইরশাদ করলেন, কেউ মাথার চুল
আউলিয়ে মূর্তিমান শয়তানের মতো উপসি’ত
হওয়ার চেয়ে বর্তমান বেশটি কি উত্তম নয় ।’-
মুয়াত্তা মালেক ২/২৬২
সৌন্দর্যপ্রিয়তা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ
বৈশিষ্ট্য। এ বিষয়ে লিখতে গেলে দীর্ঘ
গ্রন্থ রচনা করা যাবে এবং তার একটি অধ্যায় হবে সৌন্দর্য ও পরিপাটিতার বিষয়ে ইসলামের ভারসাম্য। তাই পোষাক-পরিচ্ছদ
এবং সৌন্দর্য ও পরিপাটিতার বিষয়েও
ভারসাম্য রক্ষা করা কর্তব্য। অন্যথায়
অপচয়,অহংকার, ও প্রদর্শনপ্রিয়তার শিকার হওয়া অপরিহার্য। এখন ফ্যাশনের নামে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় তা দিয়ে সমাজের অনেক
কল্যাণকার্যই সম্পাদন করা সম্ভব। কিন্তু শিল্প শব্দটি এমনই মোহনীয় যে,যেখানেই তা যোগ হয় তা-ই যেন সকল বিবেচনার উর্ধ্বে উঠে যায়। সুতরাং ফ্যাশন যখন শিল্প তখন তাতে
দোষের কী থাকতে পারে? ইসলাম মানুষকে শব্দের দ্বারা প্রতারিত না হয়ে বাস-বতার অনুগামী হওয়ার নির্দেশনা দেয় এবং প্রত্যেক বিষয়কে স্বস্থানে রাখার আদেশ করে।

৭. বিজাতির অন্ধ অনুকরণ থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য
👇👇👇
জীবনযাত্রার সকল ক্ষেত্রেই স্বকীয়তা বজায়
রাখা উচিত। কোনো আত্মমর্যাদাশীল জাতি নির্বিচার পরানুকরণের শিকার হতে পারে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সীরাতে মোবারাকা এবং
সাহাবায়ে কেরামের পবিত্র জীবনী অধ্যয়ন করলে দেখা যায়, তাঁরা যুদ্ধের বিভিন্ন কৌশল এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত কিছু বিষয় অন্যদের নিকট থেকেও গ্রহণ করেছেন। যেমন পরিখা খননের কৌশল ও পাথর নিক্ষেপকারী যন্ত্র মিনজানীক-এর ব্যবহার অন্য জাতি থেকে নেওয়া হয়েছে। যেহেতু
এগুলো ব্যবস্থাপনা ও কৌশলগত বিষয়, যাতে শরীয়ত মানুুষকে স্বাধীনতা প্রদান
করেছে, তাই তা নিন্দিত অনুকরণের আওতাভুক্ত নয় । কিন্তু যেসব বিষয় তাদের ধর্মভিত্তিক
জাতীয়তার প্রতীক বা যেসব বিষয়ে সাদৃশ্য গ্রহণ শরীয়তের কোনো বিধান বা মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ. বলেন, ‘আহলে
কিতাবের সাথে সকল বিষয়ে সামঞ্জস্য
নিন্দনীয় নয়। কেননা, আমরাও পানাহার করি ওরাও পানাহার করে। হারাম তো তা-ই, যা নিন্দিত বিষয়ে হয় এবং যাতে সামঞ্জস্যই উদ্দেশ্য থাকে।’-আলবাহরুর রায়েক আজকাল পাশ্চাত্যের যে
বেশভূষা  মুসলিমসমাজে চালু হয়ে গেছে তাকে তো পোষাক বলাই মুশকিল। শুধু ইসলামী
মূলনীতিই নয়, সাধারণ শালীনতাবোধসম্পন্ন
ব্যক্তির পক্ষেও এ জাতীয় পোষাক গ্রহণ করা একটি মুসীবতের বিষয়ই বটে। সামান্য চিন্তা করলেই দেখা যাবে, এমন বেশভূষা ইসলামের এক বা একাধিক নীতির সাথে বিরোধপূর্ণ।

৮. অগোছালোভাবে পোষাক পরিধান করা উচিত নয়।
👇👇👇
হাদীস শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশতিমালুস সাম্মা
থেকে নিষেধ করেছেন।-সহীহ বুখারী, হাদীস :
৫৮১৯
ইশতিমালুস সামমা বলা হয় চাদরজাতীয়
কোনো পোষাক পুরো শরীরে এমনভাবে
পেঁচিয়ে নেওয়া যে,সহজভাবে চলাফেরা করা যায় না এবং প্রয়োজনের সময় তাড়াতাড়ি হাত বের করা যায় না। যেমন গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়, শীতকালে মায়েরা শিশুদের গায়ে চাদর
জড়িয়ে ঘাড়ের কাছে গিঁট মেরে দেন। এভাবে
কাপড় পড়া অনুচিত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এক চাদরে ইহতিবা করতেও নিষেধ
করেছেন।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৮১৯, ৫৮২২
এখানে ইহতিবা অর্থ হল, মাটিতে দুই হাঁটু খাড়া করে বসে এক চাদরে পুরো শরীর ও দুই পা আবৃত করা। এতে উপর দিয়ে সতর দৃষ্টিগোচর
হতে পারে।
তদ্রূপ লুঙ্গি পরে বিছানায় বা মাটিতে শুয়ে হাঁটুর উপর পা তুলে দিতেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। – জামউল ওসাইল শরহু শামায়িলিত তিরমিযী
১/১৭৯
কেননা, এতেও সতর খুলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
মোটকথা, এমন অগোছালো ভঙ্গিতে পোষাক পরিধান করা অনুচিত, যা আরামদায়ক নয় অথবা যাতে সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আমাদের সমাজের মজদুর শ্রেণীর অনেককে
মালকোচা মারতে এবং অনেক শিক্ষিত যুবককে হাঁটুর উপরে প্যান্ট পরতে দেখা যায়, এটা যে শরীয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েয তা তো বলাই বাহুল্য।

৯. পোষাক পরিষ্কার ও পরিপাটি হওয়া চাই
👇👇👇
এটিও নবীজীর নির্দেশ। জাবির রা.
বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এলেন এবং এক ব্যক্তির মাথার চুল এলোমেলো দেখলেন। তখন তিনি ইরশাদ করলেন, ‘এই লোকের কি এমন কিছু নেই, যা দিয়ে সে তার
মাথা পরিপাটি করবে?’ অপর এক ব্যক্তিকে ময়লা কাপড় পরিহিত দেখে বললেন, ‘এর কাছে কি এমন কিছু নেই যা দিয়ে তার কাপড় ধৌত করবে।’-আবু দাউদ, হাদীস : ৪০৫৬
হযরত সাহ্ল ইবনে হানজালিয়া রা.  তিনি
বলেন, (কোনো এক সফর থেকে ফেরার পথে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণকে লক্ষ করে ইরশাদ করলেন, তোমরা তোমাদের ভাইদের কাছে আগমন করছ। সুতরাং তোমাদের হাওদাগুলো
গুছিয়ে নাও এবং তোমাদের পোষাক পরিপাটি কর। যাতে তোমাদেরকে (সাক্ষাৎ করতে আসা) মানুষের ভিড়ে তিলকের মতো (সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন) মনে হয়। (জেনে রেখো) আল্লাহ তাআলা স্বভাবগত নোংরামি বা ইচ্ছাকৃতভাবে নোংরা থাকা,কোনোটাই পছন্দ
করেন না।-আবু দাউদ, হাদীস : ৭০৮৩
রাস্তাঘাটে ও মাজার-দরগায় একশ্রেণীর
মানুষ দেখা যায়, যারা অত্যন্ত নোংরা ও
অপরিচ্ছন্ন থাকে,আশ্চর্যের বিষয় এই যে, অনেক সুবেশী ভদ্রলোককে এদের পেছনে ঘুরতে দেখা যায়। বলা বাহুল্য, এর সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। তদ্রূপ কোনো কোনো মানুষ অপরিচ্ছন্ন থাকাকে দ্বীনদারী মনে করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ।
এ প্রসঙ্গে মাওলানা মানাযির আহসান
গীলানী রাহ. বলেন, যেসব লোক (ইসলামের) প্রশংসিত পূর্বপুরুষদেরকে বদনাম করতে বসেছে
তাদেরকে সাহস করে একথাটাকে জানিয়ে
দিবে যে,এলোমেলো দাড়ি, বিক্ষিপ্ত কেশ
আর বেঢংগা লেবাস পোষাককে যে তারা
ধর্মীয় সূরত সাব্যস্তকরছেন, ধর্মের সবচেয়ে বড়
শিক্ষক মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দৃষ্টিতে তা ছিল
বেদ্বীনীর আলামত।-ইসলামী মাআশিয়াত ২৩

১০. পোষাক পরিধান করে আল্লাহর
শোকরগোযারী করা চাই
👇👇👇
পোষাক যেহেতু আল্লাহ তাআলার নেয়ামত তাই তা পরিধান করে শুকরিয়া আদায় করা উচিত।
আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন
কোনো নতুন কাপড় পরিধান করতেন তখন
বলতেন্ত
ﺍﻟﻠﻬﻢ ﻟﻚ ﺍﻟﺤﻤﺪ، ﺃﻧﺖ ﻛﺴﻮﺗﻨﻲ ﻫﺬﺍ، ﻧﺴﺄﻟﻚ ﺧﻴﺮﻩ ﻭﺧﻴﺮ ﻣﺎ ﺻﻨﻊ
ﻝﻩ ﻭﺃﻋﻮﺫﺑﻚ ﻣﻦ ﺷﺮﻩ ﻭﺷﺮ ﻣﺎ ﺻﻨﻊ ﻟﻪ
ইয়া আল্লাহ! তোমারই প্রশংসা। তুমিই
আমাকে এই পোষাক পরিয়েছ। আমরা তোমার নিকত এই কাপড়ের কল্যান (যথা, টেকসই
হওয়া, প্রয়োজনে কাজে আসা) ও উপকারিতা
প্রার্থনা করি এবং এর অকল্যাণ ও অপকারিতা
থেকে পানাহ চাই।-তিরমিযী, হাদীস : ১৭৬৭
পোষাকের উপকারিতা হল, এর  দ্বারা
পোষাকের প্রয়োজন পূরণ হওয়া, আত্মিক ও
মানসিক উন্নতি সাধিত হওয়া এবং আল্লাহ
তাআলার ইবাদত ও আনুগত্যের পক্ষে সহায়ক
হওয়া। পক্ষান্তরে এর অপকারিতা
হল, পোষাকের প্রয়োজন পূরণ না হওয়া, আত্মিক
ও মানসিক অবনতি ঘটা এবং আল্লাহর নৈকট্য
থেকে বঞ্চিত হয়ে পাপাচারে লিপ্ত হওয়া।
লেবাস-পোষাকের বিষয়ে ইসলমী দর্শন ও
নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুধাবন করার পর যে
কোনো মুমিনই এই দুআর গভীরতা উপলব্ধি
করবেন।
পোষাক শুধু বাইরের খোলস নয়, রুচি ও
মানসিকতারও বার্তাবাহক। উপরন্তু আত্মিক
উন্নতি বা অবনতির মাধ্যম। তাই এ বিষয়ে
অবহেলা নয়, নয় গড্ডলিকা প্রবাহে গা
ভাসানো। সচেতনভাবে সেই লেবাসই গ্রহণ
করা উচিত যা মুত্তাকী ও আল্লাহভীরু হতে
সাহায্য করে। নিঃসন্দেহে সেটিই উত্তম
লেবাস।

মসজিদে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করার হুকুম কী ???

প্রশ্ন

মসজিদে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করার হুকুম কী ???

image

উত্তর

ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺭﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
যদি ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্বীনের কোন কাজকরতে থাকে, তাহলে মসজিদে বসে ইন্টারনেট
ব্যবহার জায়েজ হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন নাজায়েজ ছবি বা ভিডিও দৃষ্টিগোচর হয়ে না যায়। দ্বীনী কাজ ছাড়া
এমনিতে মসজিদে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে না। [আলবাহরুর রায়েক-৫/৪১৯]
তবে যেহেতু ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে
মাঝে মাঝে ছবি ও অন্যান্য বিষয়ও চলে আসে,
তাই ব্যবহার না করাই উচিত।
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

প্রচলিত বিউটি পার্লারের শরয়ী বিধান

প্রশ্ন

আমি আমার নিজের বাসায় একটি বিউটি পার্লার খুলতে চাচ্ছি। ইচ্ছে আছে এমনভাবে পার্লারটি চালাবো যে, তাতে শরীয়ত গর্হিত কোন কাজ হবে না ইনশাআল্লাহ। এ কারণে নিচে পার্লার সংশ্লিষ্ট বিষয়াদী উল্লেখ করছি, যা পার্লারে সাধারণত করা হয়ে থাকে।
দয়া করে পরিস্কার ভাষায় জানাবেন যে, এর মাঝে কোন কাজটি জায়েজ আর কোন কাজটি নাজায়েজ? যাতে করে আমি গোনাহ করা থেকে বেঁচে দ্বীন মেনে পার্লারটি চালাতে পারি। যাতে করে যারা পর্দায় থাকেন, তারাও পার্লারে আসতে পারেন নিঃসংকোচে।

যেসব কাজ পার্লারে করা হয়ে থাকে
সাধারণত-
১- মহিলাও নাবালেগ বাচ্চাদের চুল কাটা
হয়।
২- চুল রং করা। কালো খেজাব লাগানো
হয়ে থাকে বয়স লুকানোর জন্য। এছাড়া আরো
অন্যান্য কালারও করা হয়।
৩- চুলকে বিভিন্নভাবে সাজানো হয়। ঝুঁটি
বাঁধাসহ বিভিন্ন প্রকারের চুলের কাটিং করা
হয়ে থাকে।
৪- ফ্যাসিয়াল করা হয়। অর্থাৎ মুখকে
পরিস্কার সৌন্দর্যমন্ডিত করার জন্য চেহারায়
বিভিন্ন প্রকার ক্রিম মালিশ করা হয়।
৫- হাত-পা মালিশ করা হয়।
৬- ভ্রু চিকণ করা হয়।
৭- হাত পায়ের চুল উপড়ানো হয়।
৮- চেহারার চুল উপড়ানো হয়। অর্থাৎ দাড়ি,
গোফ, কপালে ইত্যাদিতে গজানো চুল উপড়ানো
হয়ে থাকে।
৯- বধু সাজানো হয়।
প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে যদি পরিস্কার
ধারণা দিতেন শরীয়তের আলোকে তাহলে চির
কৃতজ্ঞ থাকবো।
আরেকটি বিষয়, এসবের মাঝে যে কাজগুলো
জায়েজ, তা কি পর্দানশীন ও পর্দহীন সবার
জন্যই জায়েজ? নাকি ভিন্নতা আছে?
প্রশ্নকর্তা- ইয়াসমিন, বাংলাদেশ।

উত্তর

ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
সাজগোজ করা, পরিপাটি থাকা এটি
মহিলাদের স্বভাবজাত বিষয়। ইসলাম
মেয়েদের স্বভাবজাত এ সাজসজ্জার
মানসিকতার বিরোধী নয়। তবে এক্ষেত্রে
শরয়ী সীমা অতিক্রম করা জায়েজ নয়। এমন
কোন কাজ করা উচিত নয়, যদ্ধারা আল্লাহ ও
রাসূলের বিধান লঙ্ঘিত হয়।
সাজসজ্জার ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতি হল,
যে কাজ ইসলামে সম্পূর্ণ অবৈধ, সেকাজ
কোনভাবেই কারো জন্যেই করা জায়েজ নয়।
এমনকি স্বামীকে খুশি করার জন্যও করা
জায়েজ নয়।
আল্লাহর নবী সাঃ স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা
করেছেন,
ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ
আল্লাহ তাআলা অবাধ্য হয়ে কোন সৃষ্টির
আনুগত্ব করা জায়েজ নয়। {মুসনাদে আহমাদ,
হাদীস নং-১০৯৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস
নং-১৭০৭}
আর সাজগোজের যেসব বিষয় জায়েজ, তা
গায়রে মাহরাম পুরুষদের দেখানোর জন্য করলে
জায়েজ নয়, এতে করে সাজগোজকারী
গোনাহগার হবে। তবে স্বামীকে খুশি করার
জন্য যদি সাজগোজ করে তাহলে এতে সওয়াব
পাবে।
বর্তমানে প্রচলিত বিউটি পার্লারের অনেক
কাজ জায়েজ হলেও অনেক নাজায়েজ কাজও
রয়েছে। জায়েজ কাজগুলো যদি শরয়ী পর্দা
রক্ষা করে করা হয়, তাহলে সে বিউটি পার্লার
চালাতে শরয়ী কোন বাঁধা নেই।
তবে যদি গায়রে শরয়ী কাজ করে, তাহলে যে
করল সেও গোনাহগার হবে, যার মাধ্যমে করলো
সেও গোনাহগার হবে।
আপনার প্রশ্নটির বিস্তারিত জবাব নিচে উদ্ধৃত
করা হল,
চুল কাটা
মহিলাদের জন্য মাথার চুল যেকোন অংশ
থেকেই হোক কাটা বা উপড়ানো কোনটিই
জায়েজ নয়। কারণ এতে করে পুরুষের সাথে
সাদৃশ্য হয়ে যায়। পুরুষের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ কাজ
করার ব্যাপারে হাদীসে কঠোর হুশিয়ারী
উচ্চারিত হয়েছে।
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ‏« ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﻤُﺘَﺸَﺒِّﻬِﻴﻦَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ ﺑِﺎﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ، ﻭَﺍﻟﻤُﺘَﺸَﺒِّﻬَﺎﺕِ ﻣِﻦَ
ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﺑِﺎﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ »
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল
সাঃ অভিশাপ করেছেন সেসব পুরুষের উপর
যারা মহিলাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করে, আর সেসব
মহিলাদের উপর যারা পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণ
করে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৮৫, ৫৫৪৬,
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৯০৪}
অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে-
ﻋَﻦْ ﻋَﻠِﻲٍّ ﻗَﺎﻝَ : ﻧَﻬَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﻥْ ﺗَﺤْﻠِﻖَ
ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓُ ﺭَﺃْﺳَﻬَﺎ .
হযরত আলী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ
মহিলাদের চুল কামাতে নিষেধ করেছেন।
{সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৯১৪, মুসনাদুল
বাজ্জার, হাদীস নং-৪৪৭, সুনানে নাসায়ী,
হাদীস নং-৫০৪৯}
এ কারণে মহিলাদের জন্য মাথার চুল কামানো
জায়েজ নয়। তবে যদি কোন কারণে অসুস্থ হয়ে
পড়ে, তাহলে প্রয়োজনের কারণে চুল কর্তন করা
জায়েজ আছে। তবে এক্ষেত্রে যখনি উজর
দূরিভূত হয়ে যাবে, তখন থেকে আর কাটা
জায়েজ হবে না।
ফাতাওয়া শামীতে এসেছে-
ﻗَﻄَﻌَﺖْ ﺷَﻌْﺮَ ﺭَﺃْﺳِﻬَﺎ ﺃَﺛِﻤَﺖْ ﻭَﻟُﻌِﻨَﺖْ ﺯَﺍﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺒَﺰَّﺍﺯِﻳَّﺔِ ﻭَﺇِﻥْ ﺑِﺈِﺫْﻥِ ﺍﻟﺰَّﻭْﺝِ
ﻟِﺄَﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟْﺨَﺎﻟِﻖِ، ‏(ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ
ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻹﺑﺎﺣﺔ، ﻓﺼﻞ ﺍﻟﺒﻴﻊ – 6/407
খুলাসাতুল ফাতাওয়াতে এসেছে-
ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺍﺫﺍ ﺣﻠﻘﺖ ﺭﺃﺳﻬﺎ ﺍﻥ ﻛﺎﻥ ﻟﻮﺟﻊ ﺍﺻﺎﺑﻬﺎ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ ﻭﺍﻥ ﻛﺎﻥ
ﻟﺘﺸﺒﻪ ﺑﺎﻟﺮﺟﻞ ﻳﻜﺮﻩ، ‏( ﺧﻼﺻﺔ ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ، ﺍﻟﻔﺼﻞ ﺍﻟﺘﺎﺳﻊ ﻓﻰ
ﺍﻟﻤﺘﻔﺮﻗﺎﺕ – 4/37 )
একই হুকুম বালেগ হওয়ার নিকটবর্তী মেয়েদের
বেলায়ও প্রযোজ্য। অর্থাৎ তাদের জন্য চুল
কাটানো জায়েজ নয়। তবে যদি বালেগ হওয়ার
নিকটবর্তী বয়সে উপনিত না হয়, তাহলে এমন
শিশুদের সৌন্দর্য বাড়াতে, বা অন্য কোন
কারণে সাজতে চুল কাটানোয় কোন সমস্যা
নেই। তবে এক্ষেত্রেও কাফের বা ফাসেকদের
নির্র্দিষ্ট ষ্টাইল বা ফ্যাশন নকল না করা
উচিত।
চুল রং করা
চুলকে রঙ্গীন করাতে কোন সমস্যা নেই। যদি
অন্য কোন হারাম কাজ না করা হয়, তাহলে
এমনিতে মহিলাদের চুল রঙ্গিন করাতে শরয়ী
কোন নিষিদ্ধতা নেই।
চুল ঝুঁটিকরণ
চুল কাটা ছাড়া বিভিন্ন প্রকার ঝুঁটি ও
ডিজাইন করাতেও শরয়ী কোন নিষেধাজ্ঞা
নেই।
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ، ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺑِﺖُّ ﻟَﻴْﻠَﺔً ﻋِﻨْﺪَ ﻣَﻴْﻤُﻮﻧَﺔَ ﺑِﻨْﺖِ
ﺍﻟﺤَﺎﺭِﺙِ ﺧَﺎﻟَﺘِﻲ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋِﻨْﺪَﻫَﺎ ﻓِﻲ
ﻟَﻴْﻠَﺘِﻬَﺎ، ﻗَﺎﻝَ: ‏«ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻣِﻦَ
ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ، ﻓَﻘُﻤْﺖُ ﻋَﻦْ ﻳَﺴَﺎﺭِﻩِ ‏» ﻗَﺎﻝَ: ‏«ﻓَﺄَﺧَﺬَ ﺑِﺬُﺅَﺍﺑَﺘِﻲ ﻓَﺠَﻌَﻠَﻨِﻲ ﻋَﻦْ ﻳَﻤِﻴﻨِﻪ
«ِ
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, একবার আমি আমার খালা মায়মূনা
বিনতে হারিসের নিকট রাত যাপন করছিলাম।
ঐ রাতে রাসূল সাঃ ও তাঁর কাছে ছিলেন।
ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ উঠে
রাতের সালাত আদায় করতে লাগলেন। আমি
তাঁর বাম পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন তিনি
আমার চুলে ঝুটি ধরে আমাকে তাঁর ডান পাশে
নিয়ে দাঁড় করালেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস
নং-৫৯১৯, ৫৫৭৫}
তবে এক্ষেত্রে কাফের বা কোন ফাসেক
মহিলার ডিজাইন ও ষ্টাইল যেন নকল না করা
হয় সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ
ফাসেক ও কাফেরের সাদৃশ্য গ্রহণ জায়েজ নয়।
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ – ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ – ‏« ﻣَﻦْ
ﺗَﺸَﺒَّﻪَ ﺑِﻘَﻮْﻡٍ ﻓَﻬُﻮَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ».
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত।
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি যার
সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে
(আবু দাউদ শরীফ, হাদিস নং-৪০৩৩, মুসনাদুল
বাজ্জার, হাদিস নং-২৯৬৬, মুসনাদে আব্দুর
রাজ্জাক, হাদিস নং-২০৯০৮৬)
ফ্যাসিয়াল ও হাত পা মালিশ করা
শরয়ী সীমায় থেকে সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে
মহিলাদের জন্য ফ্যাসিয়াল করা, ক্রিম বা
লোশন ব্যবহার করা, হাত পা মালিশ করা
জায়েজ আছে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল
রাখতে হবে যেন শরয়ী সীমা লঙ্ঘিত না হয়।
যেমন মালিশ করতে গিয়ে যে অঙ্গ ধরা স্বামী
ছাড়া কারো জন্য জায়েজ নয়, তা স্পর্শ করা
ইত্যাদি। যদি এমনটি করা হয়, তাহলে তা
হারাম হবে।
ভ্রু চিকন করা
ভ্রু সম্পূর্ণ উপড়ে ফেলা জায়েজ নয়। হারাম।
হাদীসে এসেছে-
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ: ‏« ﻟَﻌَﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻟﻮَﺍﺷِﻤَﺎﺕِ
ﻭَﺍﻟﻤُﺴْﺘَﻮْﺷِﻤَﺎﺕِ، ﻭَﺍﻟﻤُﺘَﻨَﻤِّﺼَﺎﺕِ ﻭَﺍﻟﻤُﺘَﻔَﻠِّﺠَﺎﺕِ ﻟِﻠْﺤُﺴْﻦِ، ﺍﻟﻤُﻐَﻴِّﺮَﺍﺕِ ﺧَﻠْﻖَ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ‏» ﻣَﺎ ﻟِﻲ ﻻَ ﺃَﻟْﻌَﻦُ ﻣَﻦْ ﻟَﻌَﻨَﻪُ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ،
ﻭَﻫُﻮَ ﻓِﻲ ﻛِﺘَﺎﺏِ ﺍﻟﻠَّﻪِ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, সৌন্দর্য বৃদ্ধিকল্পে যে
নারী উলকী উৎকীর্ণ করে ও করায়, যে নারী
ভ্রƒ উপড়ে ফেলে এবং যে নারী দাঁত কেটে সরু
করে দাঁরে মাঝখানে ফাঁক বানায়, যে
কাজগুলি দ্বারা আল্লাহর সৃষ্টির মাঝে
পরিবর্তন সাধিত হয়, এদের উপর আল্লাহ
তাআলা অভিশাপ বর্ষণ করুন। আমি কেন তার
উপর অভিশাপ বর্ষন করবো না, যাদের উপর
আল্লাহর রাসূল অভিশাপ বর্ষণ করেছেন। সেই
সাথে তা আল্লাহ তাআলার কিতাবেই
বিদ্যমান আছে। {সহীহ বুখারী, হাদীস
নং-৫৯৪৩, ৫৫৯৯, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস
নং-১৪৬৭}
তবে হিজড়াদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ না হলে
ভ্রুকে কেঁচি দিয়ে ছোট করা জায়েজ আছে।
যেমন ফাতাওয়া শামীতে এসেছে-
ﻭﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﺄﺧﺬ ﺍﻟﺤﺎﺟﺒﻴﻦ ﻭﺷﻌﺮ ﻭﺟﻬﻪ ﻣﺎ ﻟﻢ ﻳﺸﺒﻪ ﺍﻟﻤﺨﻨﺚ ‏(ﺭﺩ
ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭﻥ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻻﺑﺎﺣﺔ، ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﻨﻈﺮ
ﻭﺍﻟﻤﺲ – 6/373
হাত-পা ও চেহারার চুল উপড়ে ফেলা
মহিলাদের শরীরের অতিরিক্ত লোম ও চুল
উপড়ে ফেলা জায়েজ আছে। যেমন দাড়ি মোচ,
লোম ইত্যাদি।
( ﻗﻮﻟﻪ ﻭﺍﻟﻨﺎﻣﺼﺔ ﺇﻟﺦ ‏) ﺫﻛﺮﻩ ﻓﻲ ﺍﻻﺧﺘﻴﺎﺭ ﺃﻳﻀﺎ ﻭﻓﻲ ﺍﻟﻤﻐﺮﺏ .
ﺍﻟﻨﻤﺺ : ﻧﺘﻒ ﺍﻟﺸﻌﺮ ﻭﻣﻨﻪ ﺍﻟﻤﻨﻤﺎﺹ ﺍﻟﻤﻨﻘﺎﺵ ﺍﻫـ ﻭﻟﻌﻠﻪ ﻣﺤﻤﻮﻝ
ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ﺇﺫﺍ ﻓﻌﻠﺘﻪ ﻟﺘﺘﺰﻳﻦ ﻟﻸﺟﺎﻧﺐ، ﻭﺇﻻ ﻓﻠﻮ ﻛﺎﻥ ﻓﻲ ﻭﺟﻬﻬﺎ ﺷﻌﺮ
ﻳﻨﻔﺮ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﻋﻨﻬﺎ ﺑﺴﺒﺒﻪ، ﻓﻔﻲ ﺗﺤﺮﻳﻢ ﺇﺯﺍﻟﺘﻪ ﺑﻌﺪ، ﻷﻥ ﺍﻟﺰﻳﻨﺔ
ﻟﻠﻨﺴﺎﺀ ﻣﻄﻠﻮﺑﺔ ﻟﻠﺘﺤﺴﻴﻦ، ﺇﻻ ﺃﻥ ﻳﺤﻤﻞ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ﻻ ﺿﺮﻭﺭﺓ ﺇﻟﻴﻪ ﻟﻤﺎ
ﻓﻲ ﻧﺘﻔﻪ ﺑﺎﻟﻤﻨﻤﺎﺹ ﻣﻦ ﺍﻹﻳﺬﺍﺀ . ﻭﻓﻲ ﺗﺒﻴﻴﻦ ﺍﻟﻤﺤﺎﺭﻡ ﺇﺯﺍﻟﺔ ﺍﻟﺸﻌﺮ
ﻣﻦ ﺍﻟﻮﺟﻪ ﺣﺮﺍﻡ ﺇﻻ ﺇﺫﺍ ﻧﺒﺖ ﻟﻠﻤﺮﺃﺓ ﻟﺤﻴﺔ ﺃﻭ ﺷﻮﺍﺭﺏ ﻓﻼ ﺗﺤﺮﻡ
ﺇﺯﺍﻟﺘﻪ ﺑﻞ ﺗﺴﺘﺤﺐ ﺍﻟﻤﺨﻨﺚ ‏(ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭﻥ ﻛﺘﺎﺏ
ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻻﺑﺎﺣﺔ، ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﻨﻈﺮ ﻭﺍﻟﻤﺲ – 6/373 )
বধুসাজ
ইতোপূর্বের আলোচনা দ্বারাই একথা বুঝে এসে
গেছে যে, সাজগোজ করাতে ইসলামী শরীয়তে
কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। যদি না কোন হারাম
উদ্দেশ্য হয় কিংবা কোন হারাম পদ্ধতি অনুসরণ
করা হয়, তাহলে সাজগোজ করাতে কোন সমস্যা
নেই। আর স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে সাজগোজ
করতে শরীয়ত স্ত্রীকে উদভুদ্ধ করে থাকে। তাই
স্বামীর জন্য স্ত্রীকে সাজিয়ে দেয়া বা
স্ত্রী নিজেই সাজগোজ করাতে কোন সমস্যা
নেই। তবে যদি অন্য কোন শরীয়ত বিরোধী এতে
অনুপ্রবেশ করানো হয়, তাহলে ভিন্ন কথা।
শেষ কথা
এক বাক্যে যেমন পার্লারকে নাজায়েজ বলা
যাবে না, ঠিক তেমনি এক বাক্যে তাকে
জায়েজও বলা যাবে না। উপরোক্ত দীর্ঘ
আলোচনা দ্বারা বুঝা গেল যে, হারাম কাজ
না করলে পার্লার খোলা জায়েজ আছে, আর
হারাম কাজ করা হলে জায়েজ নয়।
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

মহিলাদের জন্য চুল রং করার হুকুম কী ???

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম, আমার প্রশ্ন হলঃ
চুল রঙ করার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি?
আমি যতদুর জানি মেহেদি লাগান জায়েজ আছে (ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী, সঠিক উত্তর জানালে খুশি হব), কিন্তু যেহেতু একজন নারীর জন্য পরপুরুষের সামনে চুল খোলা রাখার অনুমতি
নেই, সেহেতু সে কি তার চুলে রঙ করে মাহরাম অথবা স্বামীর সামনে থাকতে পারবে?

উত্তর
ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ
মেয়েদের জন্য সর্ব প্রকার সাজই জায়েজ
আছে।যদি তা কোন খারাপ উদ্দেশ্য না হয় বা
শরীয়তে নিষিদ্ধ সাজ না হয়।
স্বামীকে খুশি করার জন্য চুলে মেহেদী দেয়া
বা কালো ছাড়া অন্য রং করা মহিলাদের জন্য
জায়েজ আছে। কোন সমস্যা নেই। তবে যদি
পরপুরুষকে দেখানোর জন্য হয়,তাহলে জায়েজ
নেই।
ﻭﻓﻰ ﺍﻟﺒﺬﻝ ﺍﻟﻤﺠﻬﻮﺩ – ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﻮﻭﻯ ﻣﺬﻫﺒﻨﺎ ﺍﺳﺘﺤﺒﺎﺏ ﺧﻀﺎﺏ ﺍﻟﺸﻌﺮ
ﻟﻠﺮﺟﻞ ﻭﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺑﺼﻔﺮﺓ ﻭﺑﺤﻤﺮﺓ ﻭﻳﺤﺮﻡ ﺧﻀﺎﺑﻪ ﺑﺎﻟﺴﻮﺍﺩ ﻋﻠﻰ ﺍﻻﺻﺢ
ﻭﻓﻴﻪ ﺍﻳﻀﺎ – ‏(ﺍﺟﺘﻨﺒﻮﺍ ﺍﻟﺴﻮﺍﺩ ‏) .……ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﻮﻭﻯ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻐﺰﺍﻟﻰ
ﻭﺍﻟﺒﻐﻮﻯ ﻭﺁﺧﺮﻭﻥ ﻣﻦ ﺍﻷﺻﺤﺎﺏ ﻫﻮ ﻣﻜﺮﻭﻩ ﻭﺍﻟﻈﺎﻫﺮ ﻋﺒﺎﺭﺗﻬﻢ ﺍﻧﻪ
ﻣﻜﺮﻭﺓ ﺗﻨﺰﻳﻬﺔ ﺛﻢ ﻗﺎﻝ ﻭﺍﻟﺼﺤﻴﺢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ ﺍﻧﻪ ﺣﺮﺍﻡ ﻭﻣﻦ ﺻﺮﺡ
ﺻﺎﺣﺐ ﺍﻟﺤﺎﻭﻯ ﺇﻻ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻰ ﺍﻟﺠﻬﺎﺩ ‏(ﺑﺬﻝ ﺍﻟﻤﺠﻬﻮﺩ – 5/8 )
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

মহিলাদের মাথার চুল কাটার হুকুম কি ???

প্রশ্ন :
From: sumona
Assalamu Alaikum…amar prosno hocche, Islamer dristite mohilader chul kata ki jayej?
…(samner dike chul kete rakha fashion er jonno)…r jodi erokom hoy,chul kata but hijab ba borka pore jate chul dekha na jay (kintu vetore kata),tahole ki jayej…sohoj sorol
vashay ans deben please…Allah pak er binimoye uttom jajah o khayer daan korben.

উত্তর :
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ
বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম নারীর বেশধারণকারী পুরুষের উপর আর পুরুষের বেশধারণকারিনী নারীর উপর
লানত করেছেন।{সহীহ বুখারী,হাদীস নং-৫৫৪৬}

নারীদের জন্য পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণ হারাম।
তেমনি পুরুষের জন্য নারীদের সাদৃশ্য গ্রহণ
হারাম। আর চুল ছোট করে রাখা এটা পুরুষের
স্বাভাবিক প্রকৃতি। তাই এটি নারীদের
ইচ্ছাকৃত করা পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণ হওয়া তা
জায়েজ নয়। শরীয়ত নিষিদ্ধ কাজ মানুষকে
দেখিয়ে করলে যেমন হারাম, তেমনি না
দেখিয়ে করলেও হারাম। তাই ফ্যাশনের জন্য
চুল কেটে বোরখা পরে তা ঢেকে রাখলেও
গোনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। তাই
তা পরিত্যাজ্য।
দলিল:
ﻓﻰ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ- ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﻟﻌﻦ
ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﺍﻟﻤﺘﺸﺒﻬﻴﻦ ﻣﻦ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ ﺑﺎﻟﻨﺴﺎﺀ
ﻭﺍﻟﻤﺘﺸﺒﻬﺎﺕ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ ﺑﺎﻟﺮﺟﺎﻝ ‏(ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ – ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﺒﺎﺱ،
ﺑﺎﺏ ﺍﻟﻤﺘﺸﺒﻬﻴﻦ ﺑﺎﻟﻨﺴﺎﺀ ﻭﺍﻟﻤﺘﺸﺒﻬﺎﺕ ﺑﺎﻟﺮﺟﺎﻝ- ﺭﻗﻢ
ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ 5546-
ﻭﻓﻰ ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ – ﻗﻄﻌﺖ ﺷﻌﺮ ﺭﺃﺳﻬﺎ ﺃﺛﻤﺖ ﻭﻟﻌﻨﺖ ﺯﺍﺩ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﺰﺍﺯﻳﺔ
ﻭﺇﻥ ﺑﺈﺫﻥ ﺍﻟﺰﻭﺝ ﻷﻧﻪ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ ، ﻭﻟﺬﺍ
ﻳﺤﺮﻡ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻗﻄﻊ ﻟﺤﻴﺘﻪ ، ﻭﺍﻟﻤﻌﻨﻰ ﺍﻟﻤﺆﺛﺮ ﺍﻟﺘﺸﺒﻪ ﺑﺎﻟﺮﺟﺎﻝ
‏(ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ- ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻹﺑﺎﺣﺔ، ﻓﺼﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻴﻊ – 5/261

প্রামান্য গ্রন্থাবলী
১. সহীহ বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৫৫৪৬
২. ফাতওয়ায়ে শামী-৫/২৬১
৩. ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-৫/৩৫৮
৪. ফাতওয়ায়ে বাযযাজিয়া আলা হামিশিল
হিন্দিয়া-৬/৩৭১
৫. জাদিদ ফিক্বহী মাসায়িল-১/২০৬-২০৭
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাক

অল্প বয়সে চুল পেকে গেলে তা উপড়ে ফেলা যাবে কি ???

প্রশ্ন

কারো মাথার চুল পেকে গেলে, সেই পাকা বা সাদা চুল উপড়ানো যাবে কি  ???

উত্তর

ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ
অনেক সময় এমন হয় যে, চুল পাকার বয়স হয়নি,
এমনি অল্প বয়সে রোগের কারণে মাথার চুল
পেকে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে সাদা চুল তোলা
বা উপড়িয়ে ফেলা যাবে অথবা কোন ঔষধ ব্যবহার করে তা কালো করা যাবে। কিন্তু যদি বয়সের কারণে চুল পাকে, তাহলে সেই পাকা চুল
তোলা বা উপড়ানো যাবে না। তেমনি কোন কালো খেযাব ব্যবহার করে তা কালো রঙে রাঙানো যাবে না। তা মাকরূহে তাহরীমী। তবে তাতে মেহেদী ব্যবহার করে তা লাল- মেহেদী রং করে সৌন্দর্য আনা যাবে। বরং
তা উত্তম। রাসূলুল্লাহ (সা.) সাদা চুলে
মেহেদী ব্যবহার করাকে পছন্দ করতেন।
[আহসানুল ফাতাওয়া, ৮ : ১৮৩]
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

মহিলাদের জন্য লিপষ্টিক ও নেল ব্যবহার করার হুকুম কি ?

image

প্রশ্ন

মহিলাদের জন্য লিপষ্টিক ও নেল পলিশ
ব্যবহার করার হুকুম কি? এটা কি জায়েজ ? নাজায়েজ ?

উত্তর

ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ
ইসলামী শরীয়তে মহিলাদের জন্য মেহেদী
ব্যবহার করা জায়েজ। এ ব্যাপারে সকল
ফুক্বাহায়ে কেরাম ঐক্যমত্ব। মেহেদী হাতকে
রঙ্গিনতো করে দেয়। কিন্তু চামড়ার মাঝে
পানি প্রবেশ করতে বাঁধা দেয় না।
কিন্তু লিপষ্টিক ও নেলপলিশ এর বিপরীত।
এগুলো চামড়ায় পানি প্রবেশ করতে বাঁধা
প্রদান করে থাকে। অথচ শরীরে পানি প্রবেশ
না করলে অজু হয় না। গোসল হয় না।
তাই যেসব মহিলাদের উপর নামায ফরজ তাদের
জন্য এসব থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। যাদের
উপর নামায ফরজ নয়, অথবা উজরের অবস্থায়
তথা যখন নামায পড়া মহিলাদের উপর ফরজ নয়
সেই সময়, যদি উজরের সময় শেষ হওয়ার আগে
তা মুছে যাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে তাহলে
লিপষ্টিক ও নেল পলিশ ব্যবহার করার সুযোগ
আছে। তবে শর্ত হল যে, এগুলোতে কোন প্রকার
নাপাক বস্তু মিশ্রিত থাকতে পারবে না।
ﻭﺍﻧﻪ ﻳﺒﺎﺡ ﻟﻠﻨﺴﺎﺀ ﺩﻭﻥ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ ‏( ﺧﻼﺻﺔ ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ- 4/377
ﺃﻭ ﻟﺰﻕ ﺑﺄﺻﻞ ﻇﻔﺮﻩ ﻃﻴﻦ ﻳﺎﺑﺲ ﺃﻭ ﺭﻃﺐ ﻟﻢ ﻳﺠﺰ ‏( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ
ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ -1/2
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

শরীরে ট্যাটো (Tatoo) আঁকার বিধান !!!

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম প্রশ্ন ছিল আমার বন্ধুদের জানালে উপকৃত হই …এক বন্ধু জিজ্ঞেস করেছে হাতে ট্যাটো লাগানো তো হারাম , হাতে আরবী লেখাও কি হারাম হবে?

image

উত্তর

ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ

ট্যাটো কয়েক ধরণের হতে পারে। যেমন-
১) প্রাণীর ছবিওয়ালা ট্যাটো।
২) প্রাণীর ছবি নয়, কিন্তু এমন মোটা যে ভিতরে পানি প্রবেশ করে না।
৩) প্রাণীরও ছবি নয়, বরং অন্য কিছুর ট্যাটো হয়।
৪) প্রচলিত ট্যাটো তথা উল্কি (Tatoo) নয় এমনিতে এক দুই শব্দ লেখা।
১ম, ২য় ও তৃতীয় প্রকার ট্যাটো নিষিদ্ধ।
৪র্থ প্রকারও ফাসিক ও ফুজ্জারদের সংস্কৃতি
হওয়ায় তা পরিত্যাগ করা উচিত। যদি নির্দিষ্ট
কোন ফাসিক ব্যক্তির অনুসরণে করা হয়, তাহলে
হারাম। কিন্তু এমনিতে এক দুই শব্দ লিখায়
কোন গোনাহ হবে না, যদি ভিতরে পানি
প্রবেশ করে এবং কারো অনুসরণে না করা হয়।
ﻋَﻦْ ﺳَﻌِﻴﺪِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻰ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﻗَﺎﻝَ ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺇِﻧِّﻰ
ﺭَﺟُﻞٌ ﺃُﺻَﻮِّﺭُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺼُّﻮَﺭَ ﻓَﺄَﻓْﺘِﻨِﻰ ﻓِﻴﻬَﺎ. ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻰ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﻣِﻨْﻪُ
ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻰ. ﻓَﺪَﻧَﺎ ﺣَﺘَّﻰ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ﻗَﺎﻝَ ﺃُﻧَﺒِّﺌُﻚَ ﺑِﻤَﺎ
ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ -ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ- ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠَّﻪِ – ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ – ﻳَﻘُﻮﻝُ ‏« ﻛُﻞُّ ﻣُﺼَﻮِّﺭٍ ﻓِﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻳَﺠْﻌَﻞُ
ﻟَﻪُ ﺑِﻜُﻞِّ ﺻُﻮﺭَﺓٍ ﺻَﻮَّﺭَﻫَﺎ ﻧَﻔْﺴًﺎ ﻓَﺘُﻌَﺬِّﺑُﻪُ ﻓِﻰ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ‏». ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ
ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪُ .
হযরত সাঈদ বিন আবুল হাসান বলেন, এক ব্যক্তি
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ এর কাছে এসে বলল,
আমি চিত্রকর। এবং চিত্র অংকন করি। এতএব এ
সম্পর্কে আমাকে শরীয়তের বিধান বলে দিন।
ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, আমার কাছে আস।
সে ব্যক্তি তাঁর কাছে গেল। তিনি পুনরায়
বললেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তার এত
কাছে গেল যে, ইবনে আব্বাস রা তাঁর হাত ঐ
ব্যক্তির মাথার উপর রাখলেন, এবং বললেন,
আমি তোমাকে এ সম্পর্কে এমন একটি হাদীস
শুনাচ্ছি, যা আমি রাসূল সাঃ এর কাছে
শুনেছি। আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি
যে, “সকল চিত্রকরই দোযখে যাবে। আর প্রত্যেক
চিত্রের পরিবর্তে জীবিত এক ব্যক্তিকে
বানানো হবে, যা দোযখে তাকে শাস্তি
দেবে”। ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, যদি
তোমাকে এরূপ করতেই হয়, তাহলে গাছ-পালা
বা এমন বস্তুর ছবি তৈরী কর যা প্রাণী নয়।
{সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৬২}
ﺃﻭ ﻟﺰﻕ ﺑﺄﺻﻞ ﻇﻔﺮﻩ ﻃﻴﻦ ﻳﺎﺑﺲ ﺃﻭ ﺭﻃﺐ ﻟﻢ ﻳﺠﺰ ‏( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ
ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ -1/2
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﻣَﻦْ
ﺗَﺸَﺒَّﻪَ ﺑِﻘَﻮْﻡٍ ﻓَﻬُﻮَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ
ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ
করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু
দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}
ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻮَﺍﺻِﻠَﺔَ ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻮْﺻِﻠَﺔَ
ﻭَﺍﻟْﻮَﺍﺷِﻤَﺔَ ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻮْﺷِﻤَﺔَ
যেসব মহিলা নকল চুল ব্যবহার করে এবং যারা
অন্য মহিলাকে নকল চুল এনে দেয়, যেসব মহিলা
উল্কি অঙ্কন করে এবং যাদের জন্য করে, রাসূল
স. তাদের অভিশাপ দিয়েছেন। (বুখারী : ৫৫৯৮,
মুসলিম : ৫৬৯৩)
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
ﻟﻌﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻮﺍﺷﻤﺎﺕ ﻭﺍﻟﻤﺴﺘﻮﺷﻤﺎﺕ ﻭﺍﻟﻤﺘﻨﻤﺼﺎﺕ ﻭﺍﻟﻤﺘﻔﻠﺠﺎﺕ
ﻟﻠﺤﺴﻦ ﺍﻟﻤﻐﻴﺮﺍﺕ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﻠﻪ
যেসব মহিলা সৌন্দর্য্যের জন্য উল্কি অঙ্কন
করে এবং যাদের জন্য করে, যেসব মহিলা ভ্রু
উৎপাটন করে এবং দাঁত ফাঁকা করে, আল্লাহ
তা’আলা তাদের অভিসম্পাত করেছেন।
(বুখারী : ৫৬০৪)
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক -তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড
রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।